যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বোমা হামলার অভিযোগে গ্রেফতার বাংলাদেশি আকাইদ উল্লাহ’র (২৭) সঙ্গে বাংলাদেশে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আকাইদ নিউ ইয়র্কেই জঙ্গিবাদে ‘হোম গ্রোন’ হয়েছে। সে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে বাংলাদেশে তার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। তবে দেশে সে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

বুধবার দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। কাজী নাফিস নামে একজন বাংলাদেশি আমেরিকায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় আটক হয়েছিল সেই তথ্য টেনে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, কাজী নাফিসের বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য ছিল, সে যেসব মানুষদের সঙ্গে মেলামেশা করতো তারা হিজবুত তাহেরীর ও আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে আকাইদের সম্পর্কে বাংলাদেশে এমন কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। আকাইদ কিভাবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, সে বিকারগ্রস্থ ছিলো কি না বা কারও দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে কি না সেটি ওই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসবে। আমরা তার স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিলাম, তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। তদন্তের প্রয়োজনে আবারও তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

“জিজ্ঞাসাবাদে আকাইদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই জানিয়েছে, বিয়ের পর আকাইদ তাকে জঙ্গি নেতা জসিমউদ্দিন রহমানীর বিভিন্ন বই পড়তে বলতো। কিন্তু সে সেটা পড়েনি।” আকাইদ গত বছর দেশে এসে বিয়ে করে। এবছরও সে দেশে এসেছিলো। স্ত্রী ও সন্তানের টানেই আকাইদ দেশে এসেছিল বলেই জানা য় পুলিশ। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। কারণ আমেরিকায় অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী আছে, যারা সেখানে নানা ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি করছে, তাদের উপর যাতে এ ঘটনার কোনো প্রভাব না পড়ে সেজন্য আমরা তদন্ত করছি।’

‘‘এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রয়েছে। যদি তারা আমাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করে সহায়তা চায় তবে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।’’

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা জেনেছি আকাইদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। সেখানে থেকে তারা ঢাকায় এসে বসতি স্থাপন করে। আকাইদের বাবা সানাউল্লাহ অনেক আগে তার মামার সঙ্গে আমেরিকায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি ব্যবসা করেন। সে সময় আকাইদ ঢাকার সিটি কলেজে বিবিএ পড়তো। পরে ২০১১ সালে সানাউল্লাহ তার পুরো পরিবারকে আমেরিকায় নিয়ে যান।