নওগাঁর রাণীনগরে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের মিটার চুরির হিরিক পরেছে।কয়েক দিন আগে একই রাতে চারটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও বেশ কয়েকটি গভীর নলকূপের মিটার চুরি হয়। চোরা-কারবারীদের দেয়া বিকাশ নম্বরে দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর মিটারগুলো ফিরে পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এসব মিটার চুরির ঘটনায় এলাকায় নলকূপ মালিকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। তবে চলমান মিটার চুরির ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ করেও কোন সুরহা মেলেনি বলে অভিযোগ ভুক্ত-ভোগীদের।

জানা গেছে, রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রাম ও একই এলাকার সিঙ্গারপাড়া গ্রাম এলাকা থেকে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের দুইটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটে ৬ ডিসেম্বর রাতে। এছাড়া ওই রাতেই উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের বাছের আলী ও করজগ্রাম এলাকার ফজলার চৌধুরীর ছেলে মেহেদি হাসান রানা চৌধুরীর ব্যক্তি মালিকানা গভীর নলকূপের মিটার চুরি করে নিয়ে যায়। মিটার চুরি করার সময় একটি সাদা কাগজে চোরা-কারবারীরা একটি করে বিকাশ নাম্বার দিয়ে স্ব-স্ব গভীর নলকূপে ফেলে রেখে যায়। ভুক্ত-ভোগীরা চোরা কারবারীদের দেয়া নাম্বারে ফোন করলে প্রত্যেকের নিকট থেকে প্রতি মিটার ফেরৎ পেতে ২০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। সমঝোতার মাধ্যমে কেউ ৫ হাজার, কেউ ৭ হাজার টাকা বিকাশ নাম্বারে দিলে ঘটনার তিন দিন পর নির্দিষ্ট স্থানে মিটারগুলো ফেলে রেখে যায় চোরেরা। এঘটনার পর থেকে এলাকায় গভীর নলকূপ মালিকদের মাঝে মিটার চুরির আতংক দেখা দিয়েছে বলে ভোক্তভুগিরা জনান।
উপজেলার সিঙ্গারপাড়া গ্রামের গভীর নলকূপ অপারেটর সাবানা বিবি ও বেলঘড়িয়া গ্রামের অপারেটর হামিদুল ইসলাম জানান, মিটার চুরির পর চোরদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে ৫ হাজার টাকা করে বিকাশ করায় ৯ ডিসেম্বর রাতে নির্দিষ্ট স্থানে মিটার ফেরৎ দিয়ে যায়। তবে মিটার চুরির ঘটনার পরে চোরদের দেয়া বিকাশ নাম্বারসহ থানাপুলিশকে জানালেও এর কোন প্রতিকার মেলেনি। ফলে তাদের দাবিকৃত টাকা দিয়েই মিটার ফেরৎ নিতে হয়েছে। করজগ্রামের মেহেদি হাসান রানা জানান, তার ব্যক্তি মালিকানা গভীর নলকূপের মিটার চুরির পর চোরদের দেয়া বিকাশ নাম্বারে ৭ হাজার টাকা দেয়ায় মিটারটি ফেরৎ পেয়েছেন।
এব্যাপারে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর রাণীনগর জোনের প্রকৌশলী তিতুমির রহমান জানান, মিটার চুরির ঘটনায় চোরদের দেয়া বিকাশ নাম্বার সহ আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। এর আগেও শুধু বরেন্দ্রের আওতায় গভীর নলকূপের প্রায় ৬/৭ টি মিটার একই ভাবে চুরি হয়েছিল।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, মিটার চুরি এবং বিকাশ নাম্বার দিয়ে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে ও মিটার চুরির চক্রকে সনাক্ত করার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।