কোনো রকম অঘটন ছাড়াই শেষ হলো রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট শেষে এখন চলছে গণনার পর্ব। তবে নির্বাচনে সরকারের বিরুদ্ধে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ এনেছে বিএনপি। বিএনপির এমন অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, রংপুর সিটি নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ প্রথম থেকেই ছিল শান্তিপূর্ণ। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কমিশন সন্তুষ্ট উল্লেখ করে সিইসি বলেন, কারচুপির ব্যাপারে বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। এর আগে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর সিইসি বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) রংপুর সিটি কর্পোরেশনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনুকূলে রয়েছে।

রংপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা সকালে ভোট দিয়ে বেরিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এখনো পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। শেষ পর্যন্ত এ অবস্থা বজায় থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারলে তার বিজয় নিশ্চিত বলেও মন্তব্য করেন বাবলা।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু ভোট কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে একজন হারবে একজন জিতবে। এই হারজিতের প্রতিযোগিতায়ই আমরা নেমেছি।’

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অবস্থা বজায় থাকলে নৌকা প্রতীক বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। মন-মানসিকতা ঠিক রেখে যেন প্রার্থীরা সবাই ভাই হিসেবে এবং রংপুরের সন্তান হিসেবে একে অপরকে কাছে টেনে নিয়ে কাজ করে যেতে পারেন সেই প্রার্থনা করেন তিনি।

ভোটকেন্দ্র থেকে বের হয়ে এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে অনেক মানুষের ভিড়। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চলছে। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আশা করছি লাখো ভোটের ব্যবধানে আমরা জিতব। এটা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটা পরীক্ষা। তাই নিজেদেরকে প্রমাণ করার জন্যই এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে রংপুর সিটির এই নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার দলের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাও বলেন, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনের দায়িত্বে যারা আছেন তারা সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এভাবে চলতে থাকলে লাঙ্গলের বিজয় সুনিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে। ভোট শেষ হয় বিকাল ৪টায়। প্রথমবারের মতো রংপুর সিটিতে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪। নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ১৯৩টি কেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দেন। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দিতে প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও আমর্ড পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বিজিবি ও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনী মাঠে কাজ করছে। প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিরোধীদল জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ৭ জন। ২১১ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬৫ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।