বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’Ñপ্রকম্পিত গর্জন। গ্যালারিতে লাল-সবুজ পতাকার দোল খেয়ে যাওয়া। বাংলাদেশের ফুটবলে এ তো ভুলে যাওয়া দৃশ্য।রোববার মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবল উপলক্ষে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফিরে এল এমন দৃশ্য। দর্শকদের সমর্থনের জবাবটা ভালোই দিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন শামসুন্নাহার।
স্কোর লাইনটা বোঝাতে পারছে না ম্যাচে বাংলাদেশের দাপট। বল পজিশনে অনেক এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে আগের ম্যাচের মতো টিকি-টাকা ফুটবল আর দেখাতে পারেনি গোলাম রব্বানির শিষ্যরা। আসলে অঙ্ক কষেই মাঠে নেমেছিল ভারত। বাংলাদেশের মেরুদন্ড দুই মিডফিল্ডার অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা ও মনিকা চাকমাকে কড়া ম্যান মার্কিয়ে রেখে কিছুটা সফলতা দেখিয়েছে তারা। তাই মাঝমাঠ থেকে ফণা তোলা সাপের মতো রক্ষণচেরা পাস আজ কিছুটা ছিল অনুপস্থিত।তবুও অদম্য বাংলাদেশকে থামানো যায়নি। গ্র“প পর্বের তিন ম্যাচে এক গোলও হজম করেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আজ ফাইনালে বাংলাদেশের রক্ষণ দেয়াল ভাঙবে, এমন ভয়ও সৃষ্টি করতে পারেনি প্রতিপক্ষ। তবে বাংলাদেশের গোলরক্ষক শামসুন্নাহারকে সময়মতো পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসে দু-একটা বল ক্লিয়ার করতে হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ফ্রি-কিক নিতে হয়েছে গ্রিপে। এই তো !অন্যদিকে উইং দিয়ে মার্জিয়া ও শামসুন্নাহার আক্রমণের ঝড় তুললেন ফর্মুলা ওয়ানের গতিতে। বিশেষ করে বাঁ প্রান্তে বাঁ পায়ের শামসুন্নাহারকে থামাবে, এমন সাধ্য আছে কার। ৪১ মিনিটে বাংলাদেশের গোলটি করেছেন শামসুন্নহারারই। বাম প্রান্ত দিয়ে বক্সে প্রবেশ করে আনুচিং মারমাকে পাস দিয়ে ফলো থ্রুতে যায় সে। গোলমুখের জটলা থেকে আনুচিং মারমা শট নিলে গোলরক্ষকের হাতে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে আলতো ভলিতে জালে জড়ায় শামসুন্নাহার।৬১ মিনিটে আনাই মগিনি-মার্জিয়া ও তহুরার রসায়নে ম্যাচের সেরা মুভ। রাইটব্যাক আনাই মগিনি উইঙ্গার মার্জিয়াকে বল দিয়ে ওভারল্যাপে উঠে সেই বল নিয়ে এরিয়াল থ্রু খেলে তহুরাকে। সেখান থেকে তহুরা বল নিয়ে একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটালেও বল চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। হলো না ২-০। গোল ব্যবধান যা-ই হোক । জয় তো জয়ই জয়। এই জয়ে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলের প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ অদম্য, এই বাংলাদেশ অপরাজিত । এই বাংলাদেশকে কেউ গোল দিতে পারে না।