আগামী জাতীয় নির্বাচনে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়Ñএ কথা উল্লেখ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। রোববার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে খালেদা জিয়া বলেন, তাছাড়া বাংলাদেশে কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।খালেদা জিয়া বলেন, আমরা দেশে গণতন্ত্র চাই, বহুদলীয় গণতন্ত্র চাই। সকলের অংশগ্রহণে যাতে দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয় সেটি আমরা চাই। সেই নির্বাচন হতে হবে কার অধীনে? নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।তা না হলে কিন্তু কখনোই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে কজন লোক গিয়েছিল ভোট দিতে? যদি সত্যিকার নির্বাচনই হয় তাহলে কী করে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হল? এখন তারা চায় আবারও সেই রকমভাবে। বিএনপিকে দুর্বল করতে সরকার দমননীতির আশ্রয় নিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, মাদক ব্যবসা এটা সরকারি দলের লোকরা করছে। এর মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিশেষ করে যুব সমাজকে ধ্বংস করার কাজ করছে তারা। ধরাও পড়ছে, কিন্তু তাদের বিচার হচ্ছে না। দেশ ‘অনাচারে ভরে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, বাংলাদেশ অন্ধকার একটা সময় অতিক্রম করছে। থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই আমাদের সকল ধর্মের মানুষকে, সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের জন্য এক হতে হবে।
এর আগে খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার অভিযোগ করেন।তিনি দাবি করেন, রোববার দুপুর ১২টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে সরকার।খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় পায়Ñ তারা মানুষকে সম্মান দিতে জানে না তাই দেশের মানুষও এখন আওয়ামী লীগকে সম্মান করে না।দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলন, সংগ্রাম ও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।খালেদা জিয়া বলেন, দেশে কোনো প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে চলছে না। সবাই দেখেছে, কিভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার কারণে প্রধান বিচারপতিকে (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় পায় দাবি করে বিএনপি প্রধান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনলেই তাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় পায়। কারণ মুক্তিযোদ্ধারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। এদের প্রত্যেককে সম্মান করা উচিত। স্বাধীনতার সুফল কেবল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের লোকজন ভোগ করছে অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, কাউকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না। এর নাম কি গণতন্ত্র? এটাই কি স্বাধীনতার সুফল। আসলে স্বাধীনতার সুফল কেবল আওয়ামী লীগ ও তাদের লোকজন ভোগ করছে। তারা লুটপাট করছে। এসময় দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলন-সংগ্রাম ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলেন খালেদা জিয়া। সরকার পাকিস্তানিদের কায়দায় চলছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, একই অবস্থায় আজকে দেশ গণতন্ত্রহীন। দেশে নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচন হয় না।বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এলডিপি সভাপতি কর্নেল অব. অলি আহমদ, মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।