লগ্নিকারকসহ পর্যটক এবং দক্ষ্ণিাঞ্চলবাসীর জন্য সুখবর। সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটার ভাঙ্গন রোধে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এটির ডিজাইন অনুমোদন করা হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে এ প্রকল্পের কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সম্পুর্ণ সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পের বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয়-বরাদ্দ নির্ধারন করা হয়েছে ২১২ কোটি টাকা। কুয়াকাটা সৈকতের শুন্য পয়েন্ট থেকে দুই দিকে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত এলাকা নিয়ে এ প্রকল্পের কাজ হবে। পশ্চিম দিকে দেড় কিমি এবং সাড়ে তিন কিমি পুবে সৈকত রক্ষায় এ কার্যক্রম করা হবে। গ্রীণ সী ওয়াল নির্মাণের মধ্য দিয়ে শোরলাইন বরাবর স্থীর থাকবে। সৈকতের দেশভাগে গ্রীণ সী ওয়ালের ওপর দিয়ে পর্যটকরা হাঁটাচলা করতে পারবেন।সী ওয়ালের ওপর ঘাস জন্মাবে। এটি হবে পরিবেশ বান্ধব। হবে দৃষ্টিনন্দন। পর্যটক-দর্শনার্থীরা পারবে সী ওয়ালে বসে সৌন্দর্য অবলোকনের সুযোগ। সী ওয়ালটি অবস্থান ভেদে ২১ মিটার প্রস্থ এবং দুই-আড়াই মিটার উচু হবে। গ্রীণ সী ওয়ালের সামনের দিকে উত্তাল ঢেউয়ের তান্ডব ঠেকাতে নির্দিষ্ট এলাইনমেন্ট বরাবর সাগরের অন্তত তিন মিটার গভীর তলদেশে জিও টিউব বসানো হবে। যার ফলে পলি জমে বীচের পরিধি আরও বাড়বে। প্রশস্ত হবে। জিওটিউবটি এমনভাবে বসানো হবে যে জোয়ারের সময় এটি পানির নিচে থাকবে। ফলে দৃশ্যমান হবেনা। পর্যটকের দৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে না। জিও টিউবের ওপর দিয়ে সহজেই নৌকাসহ জলযান সাগর অভ্যন্তর থেকে বেলাভূমে ভিড়তে পারবে। সৈকতের ভাঙ্গন রোধে এবং পূর্বের প্রশস্ততা ফিরে আনার জন্য এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে পাউবোসুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে বেলাভূমের ক্ষয় রোধে এ প্রকল্পটি হাতে নেয় হয়েছে। দুই থেকে আড়াই মিটার উচ্চতার টপে প্রস্থ থাকবে তিন মিটার। নিচে প্রস্থ থাকবে প্রায় ১৪ মিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ীভাবে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষার জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় দশ বছরে কুয়াকাটা সৈকতের দীর্ঘ এলাকা সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সৈকতের বেলাভূমে এখন আর জোয়ারের সময় ওয়াকিং জোন থাকে না। মনোলোভা এ সৈকতের হাজার হাজার নারিকেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা সাগরের উত্তাল ঢেউ গিলে খেয়েছে। সবশেষ কুয়াকাটার ঐতিহ্যবাহী ফার্মস এন্ড ফার্মস খ্যাত নারিকেল বাগানের টিনশেড বাংলোটি অতি সম্প্রতি অস্বাভাবিক জোয়ার লন্ডভন্ড করে দেয়। এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে কুয়াকাটা পৌর এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ। ২০০৪ সাল থেকে কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু কোনটাই বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবারে সৈকত রক্ষা প্রকল্পের কাজ আগামি বছরের নতুন সুখবর বয়ে আনবে বলে পাউবোর এ প্রকৌশলী নিশ্চিত করেই জানালেন। কুয়াকাটা সৈকত রক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরুর খবরে কুয়াকাটার লগ্নিকারকসহ সেখানকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি নেমে এসেছে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, এপ্রকল্পটি কুয়াকাটার উন্নয়নে বহুল কাঙ্খিত ছিল। এখন যথাসময় বাস্তবায়িত হলে লগ্নিকারকরা অবকাঠামোগত উন্নয়ন তরান্বিত করবে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মাহবুবুর রহমান বলেন, কুয়াকাটার উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল পদক্ষেপ নিয়েছেন। যার বাস্তবায়ন চলছে। এনিয়ে কারও শঙ্কার কিছুই নেই।