বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে দেশব্যাপী একযোগে ৬৪টি জেলায় ২৮-৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত ৪(চার)দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭’ আয়োজন করা হয়েছে। দেশীয় চলচ্চিত্রের বিকাশ ও উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু ও নির্মল চলচ্চিত্র আন্দোলনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে চলেছে। একটি শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক-মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গঠনে বিশেষত শিশুদের সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম। চলচ্চিত্রের সেই গুরুত্ব অনুধাবন করেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছে ‘বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭’

আজ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ বিকাল ৫.০০টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী মুস্তাফা মানোয়ার, চলচ্চিত্র সংগঠক জনাব মুনিরা মোরশেদ মুন্নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক জনাব মো: বদরুল আনম ভূঁইয়া এবং শিশু নির্মাতা ফারহা জাবীন ঐশি। আলোচনা শেষে প্রদ্বীপ জালিয়ে ৪দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।
উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি অ্যাক্রোবেটিক দলের পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী এবং নৃত্যদলের পরিবেশনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশিত হয়।

‘বাংলাদেশ শিশু চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৭’ উপলক্ষে গঠিত সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি সিলেকশন কমিটির সম্মানীত সদস্যবৃন্দ উৎসবে শিশুতোষ ও শিশু নিমার্তাদের চলচ্চিত্র উভয়ক্ষেত্রে প্রদর্শনীর জন্য ৪০টি চলচ্চিত্র মনোনীত করেছেন। সিলেকশন কমিটির সদস্যবৃন্দরা হলেন- চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক ড. সাজেদুল আউয়াল, চলচ্চিত্র সংগঠক জনাব মুনিরা মোরশেদ মুন্নি, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংগঠক জনাব তারেক আহমেদ, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জনাব বেলায়াত হোসেন মামুন, বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব ফরিদ আহমেদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা জনাব ফারহা জাবীন ঐশী এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক চাকলাদার মোস্তফা আল মাস্উদ।

শিশুতোষ চলচ্চিত্র ও শিশু নির্মাতাদের চলচ্চিত্র উভয়ক্ষেত্রে পৃথকভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বিশেষ জুরি পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। পুরষ্কার প্রদানের লক্ষে চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী’কে চেয়ারম্যান করে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি জুরি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দরা হলেন শিল্পী মুস্তাফা মানোয়ার, চলচ্চিত্র নির্মাতা জনাব মোরশেদুল ইসলাম, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক জনাব ফরিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী এবং কমিটির সদস্য-সচিব বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক জনাব মো: বদরুল আনম ভূঁইয়া।

উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘শিশুতোষ চলচ্চিত্রে’র ক্ষেত্রে ক্রেস্ট ও সনদ পত্রের পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরষ্কারের অর্থমূল্য ১ লক্ষ টাকা, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ৫০ হাজার টাকা ও বিশেষ জুরি পুরষ্কার ২৫ হাজার টাকা এবং ‘শিশু নির্মাতা’দের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরষ্কারের অর্থমূল্য থাকবে ৫০ হাজার টাকা, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা ৩০ হাজার টাকা ও বিশেষ জুরি পুরষ্কার ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও উৎসবের সমাপনী দিনে উৎসবে অংশগ্রহণকৃত চলচ্চিত্রের সকল নির্মাতাদের সনদপত্র প্রদান করা হবে।

উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকবে ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, সকাল ১০.০০টা থেকে ‘চলচ্চিত্র অনুধাবন’ শীর্ষক বিষয়ক কর্মশালা। এছাড়াও ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭, বিকাল ৪.০০টা জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।