বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ দুধর্ষ জঙ্গী জেএমবি’র সুরা সদস্য ও দক্ষিনাঞ্চল প্রধান আবু সাঈদ ওরফে আব্দুল করিম ওরফে শ্যামল শেখকে বিদেশী পিস্তল সহ গ্রেফতার করেছে। সে একটি বিস্ফোরণ মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বোমা হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলো।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ইন্টেলিজেন্স শাখা ও বগুড়ার ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত ১ টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় সে বগুড়া- নাটোর মহাসড়কের পাশে অবস্থান করছিলো।সে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বোমা হামলার অন্যতম অভিযুক্ত। বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শনিবার দুপুরে দুর্ধষ এই জঙ্গীকে গ্রেফতার বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিংএ জানান, সাঈদ ওরফে শ্যামলের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চরচাঁদপুরে।তার বাবার নাম শহিদুল্লাহ শেখ। ২০০২ সালে সে জেএমবিতে যোগদানের পর রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায় জেএমবি প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে। রাজশাহীর বাগমারায় সে বাংলা ভাই ও শায়খ আব্দুর রহমানের সহযোগী ছিলো। নওগাাঁর একটি বিস্ফোরন মামলায় মৃত্যুদন্ড হওয়ার পর সে ২০০৭ সালে ভারতে পালিয়ে যায়।বর্তমানে নব্য জেএমবি’র এই শীর্ষ জঙ্গী বাংলাদেশ ও ভারতে একাধিক নামে পরিচিত। তার এক নাম ছিেেলা ডেঞ্জার সাকিল। এর মধ্যে ভারতে সে তালহা ও শ্যামল শেখ নামে পরিচিতি ছিলো।২০০৯ সালে সে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিবাদে সে জেএমবি’র সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করে ভারতে বসবাস শুরু করে এবং সেখানে জেএমবির কার্যক্রম শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, বীরভুম ও বর্ধমান জেলায় সে জেএমবির দায়িত্বশীল হিসাবে কার্যক্রম চালায়। ২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরনে সে জড়িত ছিলো। ভারতে ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)তাকে মোস্ট ওয়ান্টেড হিসাবে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করলে ২০১৫ সালের প্রথম দিকে সে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরে এস নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়। দুধর্ষতা ও সাংগাঠনিক দক্ষতার কারনে দেশে ফিরে আসার পর সে নব্য জেএমবি’র দক্ষিনাঞ্চল প্রধান ও সুরা সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পায়। পুলিশ জানায়, নব্য জেএমবি’র ৫সদস্যের সুরা মধ্যে সে অন্যতম। চলতি বছরের ১ লা অক্টোবর তার স্ত্রী খাদিজা বগুড়ায় শহরের চারমাথা এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়। বাস টার্মিনালে বাসের জন্য অপেক্ষা করার পুলিশের হাতে সে ধরা পড়ে। দুর্ধষ জঙ্গী সাঈদ ওরফে শ্যামল গ্রেফতারের সময় তার নিকট একটি বিদেশী পিস্তল , ৮ রাউন্ড গুলি, ধারাল অস্ত্র ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন একটি মটর সাইকেল পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার নিকট থেকে জেএমবি’র নেটওর্যাকের বিষয়ে তার নিকট থেকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলে পুলিশ আশা করছে।