ঘড়ির কাঁটায় নতুন বছর ঢুকে পড়েছে দুনিয়ায়৷ স্বাগত ২০১৮ সাল৷ ইংরাজি নববর্ষ সুখে-শান্তিতে কাটুক৷ এই কামনা সকল দেশবাসীর। ঘণ্টা-মিনিট-সেকেন্ড হিসেবে সময়ের কাঁটা ঘুরে চলবে৷ সেই গতিতে ভর করে ৩৬৫ দিন পার করব বিশ্ব৷ ফের আরও একবার নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার পালা৷অতীতকে ধরে রেখে বর্তমানকে সাথে নিয়ে ভবিষ্যৎ দেখাই সময়ের ধর্ম৷ সেই ধর্ম পালনে কোনওরকম বিচ্যুত হব না আমরা৷ খবর পরিবেশন করাই আমাদের লক্ষ্য৷ সেই লক্ষ্য থেকে সরব না আমরা৷ নতুন বছরে এই আমাদের অঙ্গীকার৷বিশ্ব জুড়ে চলছে বর্ষবরণ পালা৷ প্রথামত দুনিয়ায় প্রথম বর্ষবরণ করেছেন অখ্যাত কিরিবাটি দ্বীপের কিরিটিমাটির বাসিন্দারা৷ ২০১৮ সালের শুভ প্রবেশ মুহূর্তে আমরা সেই সংবাদটি প্রকাশ করেছি৷ এরপর একে একে অকল্যান্ড সহ বিশ্বের সর্বত্র বর্ষবরণ পালিত হচ্ছে৷শান্তিতে কাটুক ২০১৮ সাল৷ বজায় থাকুক সম্প্রীতি ৷ কল্যাণ হোক সকলের৷ এই কামনা করেই সবাইকে আমার জানাচ্ছি নতুন বছরের শুভেচ্ছা৷আসছে নতুন বছরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান দেশের বিশিষ্টজনেরাআসছে নতুন বছরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান দেশের বিশিষ্টজনেরা।দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে সমাজে বৈষম্য কমিয়ে আনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের চর্চা হোক- এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।সাম্প্রদায়িকতা, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশী সবাই। তবে সেইসঙ্গে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ জনজীবনে কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান তাদের।

শীতের কুয়াশা ভেদ করে ২০১৮ সালের প্রথম ভোরের সূর্য যেন জানান দেয়ার আশায় আর মাত্র কয়েকঘণ্টা।গত বছরের সকল ব্যর্থতার মেঘ সরিয়ে নতুন বছর বয়ে আনবে সাফল্যের নতুন নতুন বারতা এমনটাই কামনা তাদের। দেশ আর দেশের মানুষকে নিরাপদ আর শান্তিতে রাখা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই। সেই দায়িত্ব পালনে বিগত বছরে সরকার শতভাগ সাফল্য দেখাতে না পারলেও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের আস্ফালন দেখতে হয়নি দেশবাসীকে। তবে এ অর্জনের ধারাবাহিকতায় নতুন বছরে যেন ধর্ষণ, হত্যা, গুমের মতো ঘটনা আর দেখতে না হয় সে প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের।২০১৮ এ একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এ সালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা নিয়ে রয়েছে উদ্বেগও। তাই পরিস্থতি সামাল দিতে এখনই ব্যাবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন নারী নেত্রী অ্যারোমা দত্ত।নারায়ণগঞ্জ আর রংপুর সিটি নির্বাচনকে মডেল ধরে জাতীয় নির্বাচনেও সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ তাদের। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকেও আন্তরিক হতে হবে বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।অন্যদিকে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার হিসেবে নারীদের পেছনে রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলেও আইনজীবী সালমা খান।তাই বিগত বছরের মতো নারীর ওপর সহিংসতার পুনরাবৃত্তি যেন নতুন বছরেও দেখতে না হয় সে প্রত্যাশা নারী নেত্রীদের।

নতুন বছরে অর্থনীতিতে বেগবান হওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য দূর আর সাধারণ মানুষের জীবনবোধেও পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের।বিশ্বের কোনও বড় শহর হিসেবে সবার আগে ২০১৮ সালকে বরণ করে নিলো নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ড। শহরের কেন্দ্রস্থলের ১ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতার স্কাই টাওয়ারে বর্ণিল আলোকচ্ছটার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হয় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর।আন্তর্জাতিক মান সময়ের তারতম্যের কারণে নতুন বছরকে আগে বরণ করার সুযোগ পায় এমন দেশগুলোর একটি নিউ জিল্যান্ড। নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানানোর উৎসবে মেতে ওঠার ক্ষেত্রে বড় শহরগুলোর মধ্যে অকল্যান্ডের সুযোগ আসে সবার আগে। তবে বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে নববর্ষ শুরু হয় সামোয়াতে। দেশটি নিউ জিল্যান্ডের কাছাকাছি অবস্থিত। এক ঘণ্টা আগে সেখানে নতুন বছরের আগমন হয়। নতুন বছরকে বরণ করতে অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ারে ঝুলন্ত একটি বিশাল ঘড়ির সময় দেখে রাত ১২টা বাজার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে সেখানে জড়ো হওয়া মানুষ। শুরু হয় কাউন্টডাউন। আর ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে দেখা যায় আতশবাজির বর্ণিল ছটা। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ধীরে ধীরে ২০১৭ সালকে বিদায় এবং ২০১৮ সালকে বরণ করে নেবে পুরো বিশ্ব। প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলো থেকে শুরু করে এশিয়া, ইউরোপ এবং সর্বশেষ আমেরিকার দেশগুলো নতুন বছরকে বরণ করবে। এদিকে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।তিনি বলেন, নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা।ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।রাষ্ট্রপতি খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০১৮ উপলক্ষে দেশবাসীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।তিনি বলেন, সময় থেমে থাকে না। এগিয়ে চলাই সময়ের ধর্ম। অতীতকে পেছনে ফেলে সময়ের চিরায়ত আবর্তনে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ আমাদের মাঝে সমাগত। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবগত প্রবৃত্তি। তাইতো নববর্ষকে বরণ করতে বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন। আমরাও পিছিয়ে নেই। ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আমাদের তরুণ সমাজসহ গোটাদেশ।

তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ জাতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকলেও ব্যবহারিক জীবনে ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকা বহুল ব্যবহৃত। তাই জাতীয় জীবনে ইংরেজি বর্ষপঞ্জি প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় অবিচ্ছেদ্যভাবে মিশে আছে।রাষ্ট্রপতি কামনা করেন খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০১৮ সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ বয়ে আনুক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইংরেজি নতুন বছর ২০১৮ উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিÍপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেন, নতুনের আহ্বানে পুরাতন সব জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে নতুন সূর্যের আলোয় আলোকিত হোক আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। নতুন বছর আামাদের সবার জীবনে অনাবিল সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি বয়ে আনুক। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনা করি।আগামীকাল নতুন ইংরেজি বছর ২০১৮। এ উপলক্ষক্ষ রোববার দেয়া এক বাণীতে এ আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিÍপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করি। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে মধ্যমআয়ের এবং ২০৪১ সালের আগে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করব ইনশাল্লাহ। এদিকে, নতুন বছরে গণতান্ত্রিক শক্তির মিলিত সংগ্রাম করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি হৃত গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছেন।নতুন বছর উপলক্ষে রবিবার দুপুরে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বাণীতে খালেদা জিয়া এ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, গত বছরে বেশকিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা, স্বজন হারানোর বেদনা এবং অধিকার হারানোর যন্ত্রণা হয়েছে। যা আগামী বছরেআমাদের বেদনার্ত করার পাশাপাশি নুতন উদ্যোমে অধিকার ফিরে পেতে তাগিদ সৃষ্টি করবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বময় সংঘাত আর অশান্তির ঘটনা প্রবাহে নতুন বছরটিকে গণতন্ত্র, শান্তি ও অগ্রগতির বছরে পরিণত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র অপহৃত হয়েছে। গণবিরোধী শক্তি জনগণের সব অধিকারকে বন্দি। এমতাবস্থায় সব গণতান্ত্রিক শক্তির মিলিত সংগ্রামে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নতুন বছরটি সবার জীবনে বয়ে আনুক বিজয়, অনাবিল সুখ ও শান্তি। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, দূর হয়ে যাক সব অন্যায়-অবিচার, নির্যাতন। বন্ধ হোক হত্যা, গুম, খুন, যুদ্ধ বিগ্রহ ও অমানবিকতা।নববর্ষ উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সবার সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।পৃথক এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কালের আবর্তে আরও একটি বছর চলে গেল। নানা ঘটনা দুর্ঘটনার কালের সাক্ষী হয়ে বছরটি বিদায় নিল। গত বছরের সব ব্যর্থতা ও হতাশার গ্লানিকে ঝেড়ে ফেলে এবং সাফল্যকে সঞ্চয় করে আগামী পথ চলার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। আমাদের কাজে নতুন বছরটি যাতে সাফল্য ও সমৃদ্ধির বছরে পরিণত হয় সেজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।