সাবেক ইরানি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমদিনেজাদ আটক হয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক আল-কুদস-আল-আরাবি। ফিলিস্তিন-প্রবাসীদের মালিকানাধীন ওই সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। বলা হয়েছে, বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইরান সরকার আহমদিনেজাদকে আটক করেছে। তেহরানের ‘নির্ভরযোগ্য সূত্র’কে উদ্ধৃত করে আল আরাবির দাবি, কর্তৃপক্ষ এখন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির অনুমতি নিয়ে আহমদিনেজাদকে গৃহবন্দি করতে চাইছে।

২৮ ডিসেম্বর ইরানে প্রাথমিকভাবে অর্থনৈতিক সংকট এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সূচনা হলেও এরইমধ্যে তা রাজনৈতিক মাত্রা পেয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে তেহরানসহ অন্যান্য শহরে। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর প্রথমবারের মতো উত্তাল স্লোগান উঠেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ঘুষ-দুর্নীতি কিংবা হুথি-হিজবুল্লাহ-ফিলিস্তিনকে সমর্থনের বিরুদ্ধে। সরকারের দেওয়া প্রতিশ্র“তি আর বাস্তবতার ফারাকের কারণে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিই হয়ে উঠেছেন ক্ষোভের লক্ষ্যবস্তু।

আল-কুদস-আল-আরাবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিসেম্বরের শেষের দিকে সরকারবিরোধী মন্তব্য করেছিলেন আহমদিনেজাদ। অভিযোগ করেছিলেন, ইরান ‘অব্যবস্থাপনা’র শিকার এবং হাসান রুহানি ও তার সরকার ‘বিশ্বাস করে তারাই ওই ভূখন্ডের মালিক আর জনগণ হলো একটি অজ্ঞ সমাজ’। আহমদিনেজাদ আরও অভিযোগ করেছিলেন, ‘বর্তমান নেতাদের মধ্যে কয়েকজন জনগণের সমস্যা ও দুর্দশার ব্যাপারে ব্যাপক উদাসীন। সমাজ বাস্তবতার সঙ্গে তারা সম্পর্কহীন।’ এসব মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই আহমদিনেজাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে করছে আল-কুদস-আল-আরাবি।আল-কুদস-আল-আরাবির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, দ্য সান, মেট্রো, মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম আহমদিনেজাদের আটকের খবর দিলেও পৃথকভাবে কেউই খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। এদিকে সোমবার (৮ জানুয়ারি) ইরানের বিক্ষোভ ১২ দিনে গড়িয়েছে। ইরান সরকারের হিসেবে অনুযায়ী, চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতায় এই পর্যন্ত ২২ জন নিহত হয়েছে। তবে গত শুক্রবার সরকারবিরোধীরা দাবি করেছে নিহতের সংখ্যা ৫০ এ পৌঁছে গেছে।