সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে নজরদারির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার সমৃদ্ধ পুলিশ ইউনিট গঠনের উদ্যোগ সময়োপযোগী ও অপরিহার্য। তবে এ ধরনের নজরদারির অপব্যবহার হলে জনগণের বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।বিবৃতিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়- ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, উস্কানিমূলক এবং অপরাধমূলক প্রচারণাকারীদের নজরদারি করতে সরকার বিশেষ সফটওয়্যার সমৃদ্ধ পুলিশের বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ ও দমন একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তাই এ ধরণের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কার্যকর নজরদারি অপরিহার্য।

তবে নজরদারিতে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা, সততা, পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার ঘাটতি থাকলে এ ধরনের নজরদারির মাধ্যমে সংবিধান প্রদত্ত জনগণের বাকস্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে এ ধরনের ইউনিট যদি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবমুক্ত হয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থেকে বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হয়, তাহলে সেই নজরদারি ঝুঁকিপূর্ণ ও আত্মঘাতী হতে পারে।তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার কারণে বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইতোমধ্যে সংকুচিত হয়েছে। যার স্বীকৃতিস্বরূপ আইনমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী ধারাটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। সে প্রতিশ্র“তি অবিলম্বে পূরণ করতে হবে।একই সঙ্গে উল্লিখিত প্রযুক্তিনির্ভর বিশেষায়িত ইউনিটের কার্যক্রম শুরুর আগে এর সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বিশেষ করে অর্পিত ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিতের জন্য কঠোর পরিবীক্ষণ, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিধিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের সম্পৃক্ত করতে হবে।এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করাও অপরিহার্য ।