শিগগিরই নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্ত করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলছেন, সেখানে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেবেন তিনি।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে যারা রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাদের কিছুই দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রবিবার সচিবালয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সচিবালয়ে রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তিটা ব্যাড পলিসি, আই ওয়ান্ট ইটস রিফর্মস, এটা হচ্ছে না সুতরাং আমি এমপিও আটকে রেখেছি। এবারে দিতে হবে, দেবৃ আই উইল গিভ ইট উইথ কনডিশনসকী কী শর্তে এমপিও দেওয়া হবে- এ প্রশ্নে মুহিত বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কিছু অংশ বরাদ্দ থাকবে, বিভিন্ন উপকরণ কেনার জন্যও।এমপিওভুক্তি নিয়ে শিগগিরই সভা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেখানে আলোচনা হবে। এ মাসের মধ্যেই মিটিং হবে।এমপিওভুক্তি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর আগে কোনো সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়নি মন্তব্য করে মুহিত বলেন, এবার তিনি কিছু বিষয়ে সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছেন।তারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছে। শিক্ষানীতির সবটুকু আমার হাতে ড্রাফট করা, সেখানে তারা কিছু ইমপ্রুভ করে ওটা চূড়ান্ত করেছে। সেই পলিসি আমরা ফলো করছি।

সবশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে সরকার। এরপর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বন্ধ আছে।নতুন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা সম্প্রতি আন্দোলনে নামেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর নতুন করে এমপিও দিতে উদ্যোগী হয় সরকার।এতদিন কী কারণে নতুন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি- সে ব্যাখ্যাও দেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এমপিওভুক্তিটা আটকে রেখেছি সেটার কারণটা হল- এমপিওভুক্তি ইজ অনলি বেনিফিশিয়াল টু টিচার্সৃ সেজন্য এমপিও দেব কিন্তু সেখানে আমি কিছু কনডিশনস দেব, যাতে পুরো সিস্টেমটা ম্যানেজ করা যায়।একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কক্ষে পাঁচজন শিক্ষককে ক্লাস নিতে দেখার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাবিশ! একটি ঘরের মধ্যে পাঁচটি ক্লাসকে শিক্ষা দিচ্ছে, কোনোটাই মাথায় ঢোকে না। তিনি বলেন, গাছের নিচে হলেও শ্রেণিগুলো যেন আলাদা হয়, বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা যেন আলাদা বসতে পারে- এটা শিক্ষা ব্যবস্থার খুবই গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবি যৌক্তিক হলেও সরকারের সক্ষমতার অভাবে সব সময় তা দেওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের একটি নীতিমালা রয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওই নীতিমালা অনুযায়ী ধাপে ধাপে স্কুলের জাতীয়করণ হচ্ছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন,এ বছরই কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেওয়া হবে, তবে এক্ষেত্রে আমার শর্ত থাকবে।কারণ,শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আমি এমপিও নীতিমালা সংশোধন করতে বলেছিলাম।কিন্তু তারা সেটা করেনি। এ জন্যই আমার শর্ত।

উদাহারণ দিয়ে তিনি বলেন,‘একটি ক্লাসরুমে ৫টি শ্রেণির ক্লাস হয়। সেই প্রতিষ্ঠানকে এমপিও করলে শুধুমাত্র শিক্ষকরা উপকৃত হবে,অন্যরা নয়। এ জন্যই শর্ত থাকবে।এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের সাম্প্রতিক আন্দোলন ও অনশনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে যারা রাস্তায় আন্দোলন করছেন সে আন্দোলন তারা করুক। তাদের কিছুই দেওয়া হবে না।উল্লেখ্য, জাতীয়করণের দাবিতে সম্প্রতি শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনের পর এখন প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করছেন এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা। এরপরেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী।একই অনুষ্ঠানে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-র বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টকে রাবিশ বলে মন্তব্য করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী উল্টো অভিযোগ করে বলেন,‘সিপিডি বাংলাদেশকে নিচে নামানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ এতো ভালো কাজ করছে কিন্তু সেগুলো সিপিডি প্রকাশ করে না। সংস্থাটির এ রিপোর্ট প্রসঙ্গে তার মন্তব্য ‘অল আর রাবিশ’।