সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকা মহানগরীতে ছোট গাড়ি (মিনিবাস, অটোরিক্সা) নিবন্ধন বন্ধ রাখা হয়েছে। আর ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরানো যানবাহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ বুধবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্ব শুরু হওয়া অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য সেলিম উদ্দিন। জবাবে মন্ত্রী বলেন, যানজট মোকাবেলা ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে ২০ বছরের অধিক পুরানো বাস-মিনিবাস এবং ২৫ বছরের অধিক পুরানো পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন ছোট গাড়ির পরিবর্তে অধিক সংখ্যক বাস ও ডবল ডেকার বাসের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। পুরাতন জরাজীণ ট্যাক্সি ক্যাবের পরিবর্তে মহানগরীতে আধুনিক মানসম্মত ট্যাক্সি ক্যাব চালু করা হয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নগরীতে যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিএ কর্তৃক উন্নতমানের বড় বাস, আর্টিকুলেটর বাস ও দ্বিতল বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিআরটি ও মেট্রোরেল সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অবৈধ ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ এবং জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন।

সরকারী দলের সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যানজট নিরসনে গত ৮ বছরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর পশ্চিমাংশের স্বার্থে বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী কেরানীগঞ্জের যাতায়াত সহজ করতে শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোডে এক হাজার ৭৯৩ মিটার দীর্ঘ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার এবং বনানীতে ৮০৪ মিটার দীর্ঘ রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া টঙ্গীতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার উড়াল সেতু ও শীতলক্ষ্যা নদীর উপর সুলতানা কামাল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, লক্ষীপুর-চরআলেকজান্ডার-সোনাপুর জেলা মহাসড়কের ৬ষ্ঠ কিলোমিটারে পিয়ারপুর সেতু ও ৫২ তম কিলোমিটারে চেউখাল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে।

স্বতন্ত্র সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী সংসদে জানান, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে। ইতিমধ্যে ৫০ শতাংশ ভৌত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতুতে সড়কের পাশাপাশি রেল লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনে রেলপথ মন্ত্রণালয় হতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, উদ্বোধনের পর অনেক দিন পার হলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে অর্থ ছাড় শুরু না হওয়ায় রাজধানীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হয়নি। তার পরও ২০১৫ সালে আগষ্ট মাসে ‘আরলি ওয়ার্ক’স হিসেবে শুরু করে এ পর্যন্ত ৮১৩টি পাইল, ৭৬টি পাইল ক্যাপ, কলাম ২৭টি সম্পূর্ণ ও ৩৯টি আংশিক এবং একটি ক্রস বীম নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পরও প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে বিদেশিরা যে কাজ করছে তা প্রশংসার দাবিদার বলে তিনি উল্লেখ করেন।