শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি ও জাতীয়করণ সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,আমরা নীতিমালার ভিত্তিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে যাচ্ছি। আমরা আশ্বস্ত করেছি, নিশ্চয়ই আমরা বিবেচনা করব, পরবর্তী বাজেট যখন আসবে তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারব। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারের শরিক তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্কুল সরকারিকরণ ও এমপিওভুক্তি নীতিমালার ভিত্তিতেই হবে। কোন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কত, পাওয়ার যোগ্য কি না দেখতে হবে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাছে যে স্কুলের প্রস্তাব নিয়ে আসলো সেই স্কুলে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী, মাত্র দেড়শ! সেখানে সরকারিকরণ করবার প্রস্তাব নিয়ে আসছে আমারই আত্মীয়। আমি বলে দিলাম যেখানে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী, এটা কীভাবে সরকারিকরণ করব? আত্মীয় হলেই তো এসে… বললেই তো আমি করতে পারবো না। আমি ওখানে নির্বাচন করে এমপি হয়েছিলাম। একটা যৌক্তিকতা থাকতে হবে তো। আমার আত্মীয় হয়ে প্রস্তাব নিয়ে আসলো আর আমি সেটা দেখেই সরকারি করে দেবো, এত বড় অন্যায় তো আমি করব না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা প্রায় ৩৬ হাজার স্কুল সরকারিকরণ করেছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তখন আমরা ২৬ হাজার স্কুল সরকারি করে দিয়েছি। তখন কিন্তু একটা কথা ছিল, আর কোনো স্কুল সরকারিকরণের জন্য দাবি করা যাবে না, এমপিওভুক্ত করলেই হবে। এরপর বেশকিছু স্কুল এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। এরপর দেখলাম আবার শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করলেন। প্রত্যেক এলাকায় কোথায় কত স্কুল হবে, কয়টা স্কুল প্রয়োজন সেগুলো কিন্তু একটা হিসাব করে সেইভাবে স্কুল তৈরি করার নীতিমালা আমরা করে দিয়েছি। বন্যাপ্রবণ এলাকায় কিছু স্কুল তৈরি করার প্রকল্প নিয়েছি। প্রায় ৩ হাজার স্কুল করব। সেখানে স্কুল যেমন চলবে আবার বন্যা এলে সেখানে যেন মানুষ আশ্রয় নিতে পারে সেই ব্যবস্থা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে কোমলমতি প্রতিবন্ধী শিশুরা যাতে সাধারণ স্কুলেই শিক্ষা লাভের সুযোগ পায় সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। কারণ সরকার প্রতিবন্ধীদেরকে মূল ধারার জনগণের সাথে সম্পৃক্ত করতে চায়।তিনি বলেন, সরকার কোমলমতি প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ শিক্ষা দানের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ‘প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০০৯’ শিরোনামে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।তিনি বলেন, প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০০৯ এর আওতায় জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে ২০১১ সালে একটি সম্পূর্ণ অবৈতনিক স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম চালু করা হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে ঢাকা শহরের মিরপুর, লালবাগ, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ীতে ৪টি, ৬টি বিভাগীয় শহর রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর ও সিলেটে ৬টি ও গাইবান্ধা জেলায় ১টিসহ মোট ১১টি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মোট ৬২টি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল চালু করা হয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, বিএসএড ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কেয়ার-গিভারের সমন্বয়ে স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে। ওই স্কুলে সুবিধাভোগী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৭ হাজার ৭০৯ জন।