নারায়ণগঞ্জে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভির ওপর সশস্ত্র হামলা এবং এরপর আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে ছাড় না দেওয়ার অ্যাসিওরেন্স দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। যারা অস্ত্র দেখিয়েছে, যারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন’ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সামনেই সংঘর্ষের ঘটনা এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেখুন, একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য যা দরকার সেটা আমরা করছি। যারা অস্ত্র দেখিয়েছে, যারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমরা খতিয়ে দেখছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে কারা করেছে তাদের ধরার জন্য প্রচেষ্টা নিচ্ছি এবং কি কারণে করল, তার পুরোপুরি একটা ইনকোয়ারি আমরা করছি।

সিটি করপোররেশনের হকার উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় সংঘর্ষ বাঁধে জেলাটিতে আওয়ামী লীগের দুই নেতা শামীম ও আইভীর সমর্থকদের। তখন অস্ত্র প্রদর্শনও হয়।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল তিনি বলেন, এ বিষয়ে যা যা করার দরকার, আমরা সেটা করছি। অস্ত্রধারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।এই সংঘর্ষ কী কারণে হল, কারা করলো- তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।ওই সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে।স্থনীয় সরকারমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে এই সংঘর্ষ বাঁধে বলে তিনি মনে করছেন।

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার বিরোধ দীর্ঘদিনের।সংঘর্ষের পর আইভী তার উপর হামলার জন্য শামীম ওসমানকে দায়ী করেন। শামীম সমর্থকদের মাঝে অস্ত্র হাতে উপস্থিত নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার না করায় সমালোচনাও করেন তিনি।
শামীম ওসমান দাবি করেছেন, আইভী সমর্থকদের হামলার মুখে আত্মরক্ষায় নিজের লাইসেন্স করা অস্ত্র বের করেছিলেন নিয়াজুল।নিয়াজুল এখন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাকে আইভীর প্রিয় বন্ধু সুফিয়ানসহ বিএনপির ক্যাডাররা ধরে তিন দফা মারধর করেছে। চতুর্থ দফায় সে আত্মরক্ষার্থে পিস্তল বের করেছে। কিন্তু কোনো গুলি ছোড়ে নাই। সরকার তাকে অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছে তো আত্মরক্ষার্থে।নিয়াজুলের পরিচয় তুলে ধরে শামীম বলেন, নিয়াজুল আওয়ামী লীগের সাহসী নেতা নজরুল ইসলাম সুইটের ছোট ভাই। যে সুইট বিএনপি শাসন আমলে খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা দেখিয়েছিল। সুইটকে জেলখানা থেকে বের করে এনে র‌্যাব দিয়ে রাস্তার উপর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিয়াজুল ভাই হত্যার বিচার পায় নাই। তাদের পরিবারের কেউ রাজনীতিতে নাই। সে বিশাল মার্কেটের মালিক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।শামীম পাল্টা অভিযোগ করেছেন, আইভী সমর্থক ঠিকাদার আবু সুফিয়ানই সেদিন অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন।