সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই লেকহেড স্কুলের মালিক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার সকালে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এতথ্য জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ আদালতে তোলার পর গ্রেফতার তিনজনকে রিমান্ড চাইবে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ের নিজ কর্মস্থলে আসার পথে নিখোঁজ হন শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন। এর দুই দিনের মাথায় শনিবার বিকেলে নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর খোঁজ মিলছিলো না শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনের।

একই দিন গুলশান থেকে নিখোঁজ হন লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেক হোসেন মতিন। বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। আলাদা তিনটি ঘটনায় স্বজনদের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা যখন চরমে, ঠিক তখনই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ নয় বরং তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

লেকহেড স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিনকে জঙ্গি অর্থায়নে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এবং নাসিরউদ্দীন ও মোতালেব হোসেনকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতারের দাবি করে পুলিশ। এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও জানান সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের আজ আদালতে তুলে রিমান্ড চাইবে পুলিশ।

আটক দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস, জিপিএ ফাইভ বিক্রি, লেকহেড গ্রামার স্কুল চালুর ব্যবস্থা করা, মন্ত্রণালয় থেকে ভুয়া সনদ সত্যায়িত করা, দুর্নীতিগ্রস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অনুমতি পাইয়ে দেয়া এবং টাকার বিনিময়ে সরকারি কলেজ ও স্কুল শিক্ষকদের পদোন্নতি ও বদলির ব্যবস্থা করা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, দুর্নীতির দায়ে যারা আটক হয়েছে, আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দুর্নীতির অভিযোগে রোববার আটক হন শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোতালেব হোসেন এবং উচ্চমান সহকারী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও এই দু’জনের ঢাকায় নিজস্ব বাড়ি, গাড়িসহ বিপুল সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আয়ের সঙ্গে সম্পদের পাহাড় সমান ব্যবধান থাকায় বিব্রত মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, এই দায় বহন করতে হবে অভিযুক্ত দু’জনকেই।