বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামী ৮ ফেব্র“য়ারি রায় ঘোষণা করা হবে।বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটির যুক্তি উপস্থানের জন্য আদালত ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্র“য়ারি দিন ধার্য করেছেন।এ সময় খালেদা জিয়া এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।এর আগে বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন। এর পরই জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৭ মিনিটে দ্বিতীয় দিনের মতো মামলার আরেক আসামি সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামালের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ। তার ও জিয়াউদ্দিন জিয়ার মাধ্যমে দুই মামলায় হাজিরা দিয়ে আসছেন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে দ্বিতীয় দিনের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালতে খালাস দাবি করেন তার আইনজীবী আহসান উল্লাহ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল যুক্তি খন্ডন শুরু করেন। যুক্তি খন্ডন শেষে তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।এদিকে মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তিনজন পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করার আইনগত কোনও বিধান নেই।বুধবার ( ২৪ জানুয়ারি) আসামি শরফুদ্দিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন একই আইনজীবী আহসান উল্লাহ।

এর আগে আসামি শরফুদ্দিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন ১৬, ১৭, ১৮, ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি থেকে তার আইনজীবী আহসান উল্লাহ।এর আগে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩, ৪, ১০, ১১ ও ১৬ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা ।এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেছেন আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান, জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এরও আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর এই মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয় আদালতে।এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

ওই অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

অন্যদিকে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এই মামলায় বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী ও তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে আসামি করা হয়।