রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমেছে দারিদ্র্যের হার। বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সপ্রবাহ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।বাংলাদেশের অর্জন বিশ্ববাসীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলার বাংলাবাজারে স্বাধীনতা জাদুঘর উদ্বোধন শেষে নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় রয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর কল্পনা নয়, তা বাস্তব। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য-আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে ।রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতা হঠাৎ করে একদিনে অর্জিত হয়নি। এর পেছনে রয়েছে অনেক বঞ্চনা ও সংগ্রামের ইতিহাস।৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮-এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-এর ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতিসত্তার বিকাশ এবং বাঙালি জাতির চূড়ান্ত উন্মেষ ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তাতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার চিত্র ফুটে উঠে।তিনি বলেন, ইউনেস্কো সম্প্রতি এ ভাষণটিকে বিশ্বপ্রামাণ্য দলিল হিসেবে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। এরপর দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি চূড়ান্ত বিজয়।

আবদুল হামিদ বলেন, দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য ও ঘনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ ভোলায় স্বাধীনতা জাদুঘর স্থাপন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তার এ মহতি উদ্যোগের জন্য আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকে তিনি হৃদয়ে আজও গভীরভাবে লালন করেন পরম যতেœ। এই সেই তোফায়েল আহমেদ যিনি ১৯৬৯ সালে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবকে আগাড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তির পর ঐতিহাসিক জনসভায় ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।সূধী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ পারভীন আখতার।এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন, রাষ্ট্রপতির ছেলে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, ভোলা-২ আসনের আলী আজম মুকুলসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চরফ্যাশনের কুকরী-মুকরীতে ইকোপার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও অসহায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন।