আগামী ৮ ফেব্র“য়ারি অবিবেচনা প্রসূত বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাজা দেয়া হলে সেদিন থেকেই সরকার পতনের ভিত তৈরি হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আরাফাত রহমান কোকু’র তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা ও স্মরণসভায় অংশ নিয়ে দলের নেতারা এ সব কথা বলেন।বিএনপির নেতারা বলেন, খালেদা জিয়ার প্রতি সরকারের এই আক্রোশ জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। সরকারের নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যব¯’ায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক আন্দেলন গড়ে তুলা হবে।বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৮ ফেব্র“য়ারি রায়ের দিন ধার্য নিয়ে নেতারা আরো বলেন, অবিবেচনাপ্রসূত খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হলে জনগণই তার সমোচিত জবাব দেবে।বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারান্দি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলনকে থামানো যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।র্নিদলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ঘোষণা করেছেন। বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের জজ ড. আখতারুজ্জামান এই দিন দেন।এ মামলায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেনÑমাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।এ রকম একটি পরিস্থিতিতে আগামীকাল রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, আজ পর্যন্ত খালেদা জিয়া সরকার অবৈধ কোনো কাজ করেননি, অবৈধ কাজ করেন শেখ হাসিনা। জেলের ভয় দেখিয়ে লাভ কী? আমরা তো জেলের মধ্যেই আছি। জেলের ভয় দেখিয়ে গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য চাপা দেবেন, এ জন্য কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধ করে নাই।গণতন্ত্র ও শেখ হাসিনা কিন্তু সাংঘর্ষিক’ উল্লেখ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, যেখানে শেখ হাসিনা থাকে, সেখানে গণতন্ত্র থাকে না। আর যেখানে খালেদা জিয়া আছেন, সেখানে গণতন্ত্র আছে। সুতরাং গণতন্ত্র ছাড়া একটা দেশ চলে না।এই দেশে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব অনিবার্য জনগণের জন্য। আমরা আগেই বলেছি যে, কিছু লোক কিছুদিন ভয় পায়, সব লোক সব সময় ভয় পায় না। পিকুলিয়ার গভর্নমেন্ট, মানে যা মন চায় তাই করবে আর সবাই হাততালি দিবে?,’ যোগ করেন গয়েশ্বর।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দেশের অবস্থা খুব ভালো না, এটা বোঝার জন্য প-িত হওয়া লাগে না। সেটা বোঝার জন্য শেখ হাসিনার কথা শুনলেই হয়। শেখ হাসিনা সেদিন বলেছেন, শিক্ষিত মানুষের কথা শুনলে নাকি তাঁর গাধার কথা মনে পড়ে! বিএনপির প্রতিষ্ঠাই হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আমাদের প্রথম পছন্দ- অনুরোধ, আলোচনায় আসুন। দ্বিতীয়, রাস্তার আন্দোলন। আমরা রাস্তায় আন্দোলনে নামলে আপনাকে পরাজিত না করে ঘরে ফিরব না। খালেদা জিয়ার গায়ে যদি ফুলের আঁচড়ও পড়ে, বাংলাদেশ গর্জে উঠবে। যদি বিবেচনায় আসেন ভালো আর যদি না আসেন বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমে তা দেখিয়ে দেবে।সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন হাজারী, সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।