গাজীপুরে বিএনপি’র যৌথ কর্মীসভাস্থল থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ রবিবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠণের ১৫ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। এসময় পুলিশের আকস্মিক লাঠিচার্জে ও হুড়োহুড়িতে অন্ততঃ ১২জন আহত হয়েছে। পুলিশের দাবী, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সভাস্থলে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কয়েকজনকে আটক করে।

গাজীপুর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মাজহারুল আলম জানান, গাজীপুর জেলা শহরের মধ্যছায়াবিথী এলাকার ট্রাস্ট কমিউনিটি সেন্টারে রবিবার বেলা পৌণে ১১টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে জেলা বিএনপির উদ্যোগে যৌথকর্মীসভা শুরু হয়। গাজীপুরের জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ার পারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মো. জয়নুল আবেদীন ফারুক। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মাজহারুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান ফকির, গাজীপুর সদর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সুরুজ আহমেদ, গাজীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হান্নান মিয়া হান্নু প্রমুখ। অনুষ্ঠান চলাকালেই পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে অবস্থান নেয়। এতে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মাঝে আতংক দেখা দেয়। এক পর্যায়ে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে দুপুর একটার দিকে প্রধান ফটক দিয়ে নেতা-কর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারটি ত্যাগ করাকালে পুলিশ আচমকা তাদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পেছনের সীমানা প্রাচীর থেকে ছোট ফটকটি খুলে পালিয়ে গেছে। এতে প্রায় ১২জন নেতা-কর্মী আহত হয়। পুলিশ সেখান থেকে গাজীপুর সদর থানা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পূবাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সোলায়মান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গাজী সুলতান শাহজাহান জুয়েল (২৮), ছাত্রদল কর্মী ফারুক (২৭), এরশাদ সরকার (২৫), কবির হোসেন (২৮) ও দীপু (২৫) সহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠণের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।

তিনি আরো বলেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্ভাব্য রায় প্রদানকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীরা যখন সংগঠিত হচ্ছিল। তখন দলীয় নেতা-কমীদের একতা ও চাঙ্গা হওয়াকে দমিয়ে দিতে ও প্যানিক সৃষ্টি করার জন্যই পুলিশ ওই হামলা করে থাকতে পারে।

তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে জেলা বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. নাহিন আহমেদ মমতাজী (৪৫), শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম মোল্লাহ (২৮),গাজীপুর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, জেলা ছাত্রদল কর্মী ফারুক আহমদ (২৭), এরশাদ সরকার (২৫), মো. কবির (২৮) ও দীপু (২৫) রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি কোন অনুমোদন ছাড়াই ওই কর্মীসভা আয়োজন করে। সভা চলাকালে সেখানে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ সেখানে যায় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ১৫জনকে আটক করা হয়েছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন পুলিশের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোন কোন্দল সৃষ্টি হয়নি এবং নিজেদের মধ্যে কোন সংঘর্ষ হয়নি। এধনের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। পুলিশ তাদের ন্যাক্কারজনক ঘটনা আড়াল করতেই এমন বক্তব্য দিচ্ছে।