মাদারীপুরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ নগদ অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর্ডের আদেশ অমান্য করে বিদ্যালগুলোর প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

জেলা শিক্ষা কর্যালয়ের সূত্র জানায়, এবার মাদারীপুরে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৭ হাজার ৮০জন। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ১৫ হাজার ৬৫০ জন, দাখিল পরীক্ষায় ২২৯১ জন ও কারিগরি পরীক্ষায় ৮৩৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আগামী ১ ফেব্র“য়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় প্রবেশপত্র বিতরণে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অভিভাবকার ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ প্রবেশপত্রের সাথে টাকা নেয়া হয়েছে, তার সাথে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, বিশেষ ক্লাসসহ কোচিং ফি বাবদ নেয়া হয়েছে টাকা। তবে বোর্ড নির্ধারিত প্রবেশপত্র বাবদ কোন ফি নির্ধারণ করা হলেও সংশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অবৈধভাবে এই অর্থ আদায় করছেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা, তাতিবাড়ি ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০ টাকা, খালাসিকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০০ টাকা তেকে ১৫০০ টাকা, শিরিন জাহান মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০০ টাকা থেকে ১৪৫০ টাকা, চরমুগরিয়া মার্চেন্টস্ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫০ টাকা। কালকিনি উপজেলার বীরমহন উচ্চ বিদ্যালয় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, আতাহার আলী একাডেমীতে নেয়া হয় ৩৫০ টাকা, খাতিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং সনমন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০০ টাকা করে প্রবেশপত্র বিতরণ বাবদ ফি নেয়া হয়েছে।নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানালেন, প্রবেশপত্র বিতরণে ২০০ টাকা দিতে হয়। পরে হাজার টাকার উপরে দিতে হয় কোচিং ফ্রি। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের জন্যও দিতে হয়েছে ১০০ টাকা। এতো টাকা নিয়েও বিদ্যালয়গুলোর চাহিদা পূরণ হয় না। চরমুগরিয়া মার্চেন্টস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষাকরা প্রবেশপত্রের সাথে একটি ফাইল, রুলার ও একটি কলম দিয়ে বলে ১৫০ টাকা দিতে হবে। এরপর বিদ্যালয়ের মধ্যে কোচিং করছি তার টাকা ভিন্ন। সেখানে আবার দিতে হচ্ছে হাজার টাকা।

চরমুগরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর হোসেন বলেন, আমরা এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বাবদ কোন কোন প্রকার অতিরিক্ত ফি আদায় করছি না। আমরা বিদ্যালয়ে ৩ মাস অতিরিক্ত ক্লাস নিয়েছি। ৪ বিষয়ে পড়িয়েছি, সেই বাবদ ২৪০০ টাকা হয়। কিন্তু, ১২০০ টাকা ধরেছি। তবে ৩০০টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত যে যেমন পেরছে দিয়েছে। আর আমরা তাই নিয়েছি।

জানতে চাইলে জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বিতরণ বাবদ ফি আদায় হচ্ছে কি না তা আমার জানা নেই। দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা নিয়েছে অনেক বিদ্যালয়। মনে হয় তার জন্য কিছু টাকা ধরেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।তবে প্রবেশপত্র বাবদ টাকা নেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ পেলে অবশ্যই সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।