ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারিদের আন্দোলনের মুখে ওআইসি পরিচালিত গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজির (আইইউটি) ভিসি প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর পদত্যাগ করেছেন। সোমবার সকালে তিনি পদত্যাগ করেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ হতে প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর পদত্যাগ করায় আন্দোলনরতরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে।

এ প্রসঙ্গে প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, গাজীপুরের বোর্ডবাজারস্থিত ইসালামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজির (আইইউটি) কিছু সংখ্যক ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারিদের অযৌত্তিক দাবি নীতির প্রশ্নে আপোষ করা যায় না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে বৃহত্তর স্বার্থে দেশের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে ইসালামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজির (আইইউটি) উপাচার্যের পদ হতে সোমবার সকালে আমি পদত্যাগ করলাম। আমার এ পদত্যাগ পত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর এবং ওআইসি’র মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন বরাবার বেলা ১১টায় ই-মেইলে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি পদত্যাগপত্রে কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরো বলেন, এ ইউনিভার্সিটিতে প্রধান মন্ত্রীর অনুপ্রেরণার মেয়েদের (ছাত্রী) ভর্তি করার ফলে এই সকল প্রবলেমের সূত্রপাত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বহির্বিশ্বের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতেই কিছু সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থীরা বিশেষ মহলের মদদে আন্দোলনের নামে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি জানান, ইতোপূর্বে ২০১৩সালের ২১এপ্রিল প্রেষনে ঢাকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ ২০১৬সালের ৩০এপ্রিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে তিনি সেখান থেকে ২০১৬সালের ১ এপ্রিল আইইউটি’র ভিসি হিসেবে যোগ দেন। এ পদত্যাগের পর তিনি আবার বুয়েটে ফিরে যাবেন বলেন মুনাজ নূর।

এদিকে আইইউটি’র ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক তসলিম রেজা জানান, আইইউটি’র উপাচার্যের পদ হতে প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর পদত্যাগ করার সংবাদ ক্যাম্পাসে পৌছলে আন্দোলনরতরা তাদের কর্মসূচি সোমবার হতে স্থগিত ঘোষণা করে। এসময় তারা মঙ্গলবার হতে ক্লাশসহ একাডেমিক কার্যক্রমে যোগদান করার কথা ঘোষণা করে।

উল্লেখ্য, ওআইসি পরিচালিত আইইউটি’র শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের একাংশ ফ্যাকাল্টি এবং স্টাফ মেম্বারদের প্রতি অপেশাদারী আচরণ, প্রশাসনিক বিধির অপব্যবহার, কারণ দর্শানো ছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিকিউরিটি গার্ডদের চাকরি থেকে অপসারণ, সক্ষমতার চেয়ে বেশি ছাত্র নেয়া, হলে সিট দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ভিসি ড. মুনাজ আহমেদ নূর এর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিল। এসময় তারা লাগাতার ক্লাশসহ একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক তালা বন্ধ করে রাখে।