দেশে চিকিৎসার নামে অতি মুনাফা ও কমিশনভিত্তিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটছেÑপ্রসার ঘটছে প্রতারণা নির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থার।বুধবার সকালে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে রোগীদেরকে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া, প্রয়োজন না থাকলেও শুধু বাড়তি মুনাফার জন্য প্রসূতি মায়েদের সিজার করাÑ রোগীদেরকে অপ্রয়োজনীয় অসুধ কিনতে বাধ্য করা সহ সেবাগ্রহীতাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আর এসবের পেছনে রয়েছে কমিশন বাণিজ্য। বেসরকারি চিকিৎসা সেবায় এসব অনিয়মে যথাযথ তদারকির জন্য আইনেরও যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে বলে প্রতিবদনে দাবি করা হয়েছে। এর পেছনের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে স্বার্থের দ্বন্দ ও রাজনৈতিক প্রভাবকে।এ চিকিৎসা ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ জিম্মি আর আর্থিক ও শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে কমিশন ভিত্তিক বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। যেখানে চিকিৎসা ব্যয়ের ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক,সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, রিসিপশনিস্ট ও দালাল চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের এ চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উচ্চ মুনাফার জন্য বেসরকারি চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোতে ব্যবসা চলছে, সেবা গ্রহীতাকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় হচ্ছে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিধিমালা না থাকা এবং আইনের হালনাগাদ না হওয়াকেই স্বাস্থ্যখাতের এ সমস্যার জন্য দায়ী করা হয় প্রতিবেদনে। প্রসূতিসেবা নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রসবের দিনের অনেক আগে প্রসব করানোর অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ৮০ শতাংশ। এ হার সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩৮ এবং এনজিও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে ২৮ শতাংশ। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাত সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার ও মো. জুলকারনাইন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এবং টিআইবির উপ-নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।