আওয়ামী লীগেও অনেকে আছেন যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করেন এবং ভবিষ্যত পরিণতির কথা ভাবেন। তাদের প্রতিও আমার একই আহ্বান রইলো। আমরা সংঘাত, হানাহানি, নৈরাজ্য চাই না।শান্তি চাই। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এখনো আমরা আশা করে বসে আছি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

বুধবার গুলশানে চেয়ারপাসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৫টা ৭ মিনিটে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি জানান খালেদা জিয়া।সংবাদ সম্মেলনে খালেদা বলেন, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কুয়েতের তৎকালীন আমিরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। তার নাম স্মরণীয় করে রাখার জন্য কুয়েতের আমির যে অনুদান দেন তা তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানের উদ্যোগে নিয়ে আসা হয়। সেই অর্থের বিলিবণ্টন, তহবিল পরিচালনা অর্থাৎ, জিয়া অরফানেজের সঙ্গে আমি কখনো কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না।

এই অর্থ সরকারি অর্থ নয় এবং ট্রাস্টটিও প্রাইভেট ট্রাস্ট জানিয়ে খালেদা বলেন, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এ মিথ্যা মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমার আইনজীবীরা আদালতে তা প্রমাণ করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, জিয়া অরফানেজের একটি টাকাও তছরুপ হয়নি। সমস্ত টাকা প্রতিষ্ঠানের নামেই ব্যাংকে জমা আছে। এখন সুদাসলে সেই টাকা বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। এ মিথ্যা মামলায় ন্যায়বিচার হলে আমার কিছুই হবে না। তিনি বলেন, যারা এই মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে তাদেরও সাজা হওয়া উচিত। আর যদি শাসক মহলকে তুষ্ট করার জন্য অন্য রকম কোনো রায় হয়, তাহলে তা কলঙ্কের ইতিহাস হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়কারী কাউকেই ক্ষমা করে না, করবে না। আমাকে জেল বা সাজার ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমি মাথা নত করবো না। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে পিছু হটবো না। জনগণকে তাদের অধিকার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে সরকার বিএনপির চেয়েও বেশি অস্থির ও ভীত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমার বিরুদ্ধে এক মিথ্যা মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) আগামীকাল রায় হবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে শাসক মহল আমাদের চেয়ে বেশি অস্থির ও ভীত হয়ে জনগণের চলাচলের অধিকার, প্রতিবাদের অধিকার, সভা-মিছিলের সাংবিধানিক অধিকার প্রশাসনিক নির্দেশে বন্ধ করে দিচ্ছে।সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদের ভয়ে ভীত হয়ে এ হীন পথ খুঁজে নিয়েছে সরকার। তারা সারাদেশে বিভীষিকা ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।জনগণের প্রতিবাদের সম্ভাবনাকে তারা এতটাই ভয় পায়Ñ এই বলে বিস্ময় প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, আদালত রায় দেওয়ার বহু আগে থেকেই শাসক মহল চিৎকার করে বলে বেড়াচ্ছে, আমার জেল হবে। যেন বিচারক নন, ক্ষমতাসীনরাই রায় ঠিক করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে চাপের মুখে পদত্যাগ করিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করার পর কোনও আদালত শাসকদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ কায়েম করতে সাহস পাবে কিনাÑ তা নিয়ে সবারই সন্দেহ আছে।

খালেদা জিয়া বলেন, তারপরও দেশবাসীর উদ্দেশে সগৌরবে জানাতে চাই, আপনাদের খালেদা জিয়া কোনও অন্যায় করেনি, কোনও দুর্নীতি আমি করিনি।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কুয়েতের তৎকালীন আমিরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। তার নামকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কুয়েতের আমির অনুদান প্রদান করেন। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্নেল (অব.) মুস্তাফিজুর রহমানের উদ্যোগে নিয়ে আসা সেই অর্থের বিলি-বণ্টন, তহবিল পরিচালনা অর্থাৎ জিয়া অরফানেজের সঙ্গে আমি কখনোই কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট ছিলাম না। তাছাড়া, এই অর্থ সরকারি অর্থ নয়, ট্রাস্টটিও প্রাইভেট ট্রাস্ট।বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এই মিথ্যা মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমার আইনজীবীরা আদালতে তা প্রমাণ করেছেন।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘জিয়া অরফানেজের একটি টাকাও তছরূপ হয়নি। সব টাকা প্রতিষ্ঠানের নামেই ব্যাংকে জমা আছে। এখন সুদ-আসলে সেই টাকা বেড়ে তিন গুণ হয়েছে। এ মিথ্যা মামলায় ন্যায়বিচার হলে আমার কিছুই হবে না। ইনশাল্লাহ আমি বেকসুর খালাস পাবো।এর আগে, বিকাল ৫টা ৬ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন খালেদা জিয়া। দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সংবাদ সম্মেলন স ালনা করেন।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।