এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া অমূলক। যারা লুটপাট করেছে, তাদের খবর নেই, অথচ নিরপরাধ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে নেয়া হয়েছে।শনিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।অলি আহমদ অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার বিষয়টি সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত। তাকে যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেটি অপরিচ্ছ্ন্ন। বিএনপি নেত্রীকে কারাগারে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদ-ের প্রতিবাদে বিএনপি যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাতে সমর্থন করেন এলডিপি চেয়ারম্যান।সরকারের উস্কানিতে এলডিপির নেতাকর্মীদেরও পুলিশ গ্রেফতার করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পরিত্যক্ত কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদের যোগসাজস রয়েছে বলে সন্দেহ করেছেন এলডিপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ।এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শুনেছি তাকে (খালেদা জিয়া) কয়েদির কাপড় পরানো হয়েছে এবং পুরনো একটি জেলে রাখা হয়েছে। এটা কী কারণে করা হল?আমি তো মনে করি এরশাদ (সাবেক রাষ্ট্রপতি) মুক্ত আছে। তাকে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে রাখা হয়েছিলে। এটা হয়ত সরকার, আওয়ামী লীগ এবং এরশাদ ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজটা করেছে।তিন জোটের আন্দোলনে পতনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বন্দি হয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার শাসনামলে বন্দি হয়ে নাজিমউদ্দিন সড়কের এই কারাগারেই ছিলেন তিনি।

বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ সম্প্রতি বেশ কয়েকবার মামলার প্রসঙ্গ ধরে খালেদা জিয়াকে কটাক্ষ করেছিলেন।গত বৃহস্পতিবার রায়ের পর জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী সংসদে বলেছিলেন, বেগম জিয়া একদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বিনা অপরাধে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস সেই জেলখানায় এখন খালেদা জিয়া।আজ থেকে ২৮ বছর আগে কারাগারে থাকা অবস্থায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একটি বরই গাছ লাগিয়েছিলেন। সেই গাছে এখন বরই ধরেছে। সুযোগ থাকলে খালেদা জিয়াকে সেই বরই খেতে দেওয়া হোক।এরশাদ যখন বন্দি ছিলেন, খালেদা জিয়ার তখনকার সরকারের মন্ত্রী অলি বলেন, সরকার তো দুইটা নতুন জেল নির্মাণ করেছে। উনাকে (খালেদা) সসম্মানে সেখানে রাখতে পারত। একটা পরিত্যক্ত জেলে তাকে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না।সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার করার পর খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে সংসদ ভবনের দুটি বাড়িতে বন্দি রাখার বিষয়টি তুলে ধরে অলি বলেন, এবারও সেই ধরনের পদক্ষেপ সরকার নিতে পারত।এই রকম একটা জায়গায় বেগম জিয়াকে কেন রাখা হল না, বর্তমান সরকারকে তার জবাব একদিন দিতে হবে, বলেন তিনি।খালেদার মুক্তির দাবিতে বিএনপির দেওয়া সব কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন এলডিপি চেয়ারম্যান।তিনি বলেন, নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য, বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এটা সরকারের পূর্ব পরিকল্পনার অংশ বলে আমরা মনে করি।আমরা অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এই দাবিতে বিএনপি যেসব কর্মসূচি দিচ্ছে তার প্রতি আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুল করীম আব্বাসী, আবদুল গনি, কামালউদ্দিন মোস্তফা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।