পাকিস্তানের আলোচিত শিশু জয়নব ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইমরান আলীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সে দেশের একটি আদালত। পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুরের এক কারাগারের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক সাজ্জাদ আহমেদ এই রায় দেন। শনিবার সন্ত্রাসবিরোধী আদালত চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত এই রায় দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যায়, জয়নবের শরীরে পাওয়া সন্দেহভাজন অপরাধীর ডিএনএ নমুনাটি আগে ধর্ষণের শিকার হওয়া সাতটি শিশুর শরীরেও পাওয়া গিয়েছিল। গত ২৩ জানুয়ারি ওই নমুনার সঙ্গে এক সন্দেহভাজনের নমুনা মিলে যাওয়ার পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন ইমরান আলী হলেন সেই অপরাধী। সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে শুরু হয় তার বিচার। এ ঘটনায় জয়নবের চাচা ও ভাইসহ মোট ৫৬ জন সাক্ষ্য দেন।

প্রসিকিউটর জানান, ফরেনসিক রিপোর্ট ও পলিগ্রাফিক পরীক্ষায়ও প্রমাণ হয়েছে ইমরানই জয়নবকে হত্যা করেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, চারটি অভিযোগ আমলে নিয়ে ইমরানের ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাকে শিশু হত্যা, শিশু অপহরণ, শিশু ধর্ষণ এবং শিশুর সঙ্গে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিশুর দেহ উন্মুক্ত করে নির্যাতন চালানোর দায়ে ইমরানকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের কাসুর শহরে ছয় বছর বয়সী শিশু জয়নবকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় সৃষ্ট বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হন। কয়েক দিন নিখোঁজ থাকার পর বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে একটি ময়লার ভাগাড় থেকে জয়নবের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুই বছরে শহরটিতে ১২ শিশু একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেটার, চলচ্চিত্র তারকা ও রাজনীতিকরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। টুইটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ‘জাস্টিস ফর জয়নব হ্যাশট্যাগ’। জানা যায়, মক্তবে কোরআন পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে জয়নব নিখোঁজ হয়। পরিবারের অভিযোগ, নিখোঁজের বিষয়টি জানানোর পরও তারা পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখতে পাননি। জয়নবের আত্মীয়রাই পরে একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করে, যেখানে ৬ বছর বয়সী শিশুটিকে এক ব্যক্তির হাত ধরে হেঁটে যেতে দেখা গেছে। ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।