বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে।আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে অধিক জনসংখ্যা এবং ভূমির স্বল্পতা। এই অবস্থায় আপনারা যদি অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করেন তাহলে তো মিলবে না। বাংলাদেশ তো সৌদি আরব না। আবার দুবাইয়ের সঙ্গেও বাংলাদেশের কোনও মিল নেই। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৪ হাজার লোক বাস করে। অন্যদিকে দুবাইতে মাত্র ১০ জন। তাদের জমির অভাব নেই, অর্থের অভাবও নেই। তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করলে চলবে না। আমি নতুন কিছু দেখতে চাই যেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্ভব।

সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা জ্বালানি সংক্রান্ত অন্যান্য খাতের সব গবেষণাই দেশের প্রেক্ষাপটে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা জ্বালানি খাতের সব গবেষণা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেই হওয়া উচিত। আমি নতুন কিছু দেখতে চাই যেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্ভব।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা)-কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের এনার্জি রিসার্চ কাউন্সিল বিভিন্ন গবেষণায় অর্থায়ন করে থাকে। আপনারা চাইলে সেই সুযোগ গ্রহণ করে দেশের জন্য আরও ভালো কিছু নিয়ে আসুন। পৃথিবীতে অনেক কিছু সম্ভব আবার অনেক কিছু সম্ভব না। গার্মেন্টস সেক্টর চাচ্ছে ৫০ বিলিয়ন রফতানি করতে। এর জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন, গ্যাস প্রয়োজন। আপনারা কী করতে পারবেন বলেন, আমি আছি আপনার সঙ্গে।

সোলার থেকে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ৫ হাজার মেগাওয়াটের প্রজেক্ট যদি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় তাহলে আমি তা সানন্দে গ্রহণ করব। কিন্তু আমি জানি তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।এটা বাস্তবায়ন করতে গেলে পরিবেশের দিক থেকে আমি সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হবো। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সোলার প্ল‍্যান্ট বন্ধ হয়ে যাবে। আবার এই প্ল‍্যান্ট বাস্তবায়নে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ জায়গা। সেই জায়গাটা কোথায় পাবো? তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যা করা সম্ভব সেই প্রস্তাবগুলো নিয়ে আসেন। আমি আপনাদের জন্য সবসময় বসে আছি।

সেমিনারে বাপা’র সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. আলাউদ্দিন, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বারকেলে’র নবায়নযোগ্য এবং যথাযথ এনার্জি ল্যাবরেটরির পরিচালক প্রফেসর ড্যান ক্যামেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন, শরীফ জামিল, আল মুদাব্বির বিন আনাম, অধ্যাপক সাইফুল হকসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতউল্লাহ।