যথাযোগ্য মর্যাদায় নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত রাত ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহর পর্যন্ত মিশনের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরু হয়। অডিটোরিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। রাত ১০টায় শুরু হয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে উন্মুক্ত আলোচনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক সফররত সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মুন্নুজান সুফিয়ান, ইসরাফিল আলম, ফখরুল ইমাম, আনোয়ারুল আবেদীন খান, জেবুন্নেছা আফরোজ ও রোখসানা ইয়াসমিন ছুটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালির উপস্থিতিতে নিউইয়র্ক সময় ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে মিশনস্থ অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

‘আমার ভাইয়ের রক্ত রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সাথে সাথে রাত ১২টা ১মিনিটে মিশনে স্থাপিত শহীদ মিনারে সংসদ সদস্যগণ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, গোপালগঞ্জ জেলা সমিতি, যুক্তরাষ্ট্র পেশাজীবী সংগঠন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাষ্ট্র, সিলেট সদর সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং উপস্থিত প্রবাসী বাঙালিগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

তিনি মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে উপনীত হয়। আমরা পাই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, লাল-সবুজের পতাকা। জাতির পিতা ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন। বিশ্বসভায় বাংলা ভাষার মর্যাদা উচ্চ আসনে সমাসীন হয়। জাতির পিতার পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন মর্মে উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে প্রস্তাবনা রেখেছেন। এটির বাস্তবায়নে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’