প্রথমে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এখন আবার সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলতে বুলডোজার ব্যবহার করছে মিয়ানমার সরকার। আজ শুক্রবার কলোরাডো ভিত্তিক ডিজিটাল গ্লোব নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া এমনই একটি ছবি প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা এপি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শতাধিক জনশূন্য গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এপি জানায়, গত আগস্টে রোহিঙ্গাদের এসব গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় সামরিক বাহিনী। যার ফলে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

তবে মিয়ানমার সরকারের দাবি তাঁরা বিধ্বস্ত এলাকাকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। এসব গ্রামের মধ্যে একটি হলো মিন হ্লুট। দেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়া মিন হ্লুটের বাসিন্দা যুবাইরিয়া নামের এক তরুণী জানান, তিনি কিছুদিন আগে তাঁর ফেলে আসা গ্রামে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর গ্রামের অবস্থা দেখে শোকে স্তব্ধ হয়ে যান। এপিকে ফোনের মাধ্যমে এসব জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘গত বছর গ্রামটি পুড়িয়ে দেওয়া হলেও কিছু অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন আর কিছুই নেই, এমনকি কোন গাছপালাও নেই। সবই শেষ। গুঁড়িয়ে দিয়েছে সবকিছু। চেনার মতো আর কিছু নেই। এখানকার পরিত্যক্ত বাড়িগুলোকে মাটির সঙ্গে সমান করে দেওয়া হয়েছে। সব স্মৃতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সব মুছে দিয়েছে।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মিয়ানমার বিশেষজ্ঞ রিচার্ড উইয়ার এই ছবিটি দেখে বলেন, ‘সেখানে ক্ষেত-খামার, গাছপালা বা চেনার মতো আর কিছুই নেই। সবই মুছে ফেলা হয়েছে এবং এটি খুবই উদ্বেগজনক। কেননা এসব ছিল অপরাধের আলামত।’

গত বছর আগস্টের শেষ দিকে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে রোহিঙ্গারা। সরকারের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৯ লাখের ওপর।