রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ব্যবসায়ী রাজন হত্যা মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তিন জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান এ আদেশ দেন।

এই মামলার আসামিরা হলেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জয়, মো. আলমগীর ঢালী, মো. মাসুদ আহমেদ ইমন, নাজমুল ও নিয়ামত। এদের মধ্যে মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জয় জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। আর নাজমুল ও নিয়ামত মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছে। মো. আলমগীর ঢালী ও মো. মাসুদ আহমেদ ইমন কারাগারে আছে। তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সামসুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাজনকে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সামসুর রহমান বলেন, ‘২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে চার জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এবং হত্যার দায় স্বীকার করেছে।’

আদালতে বিচারক রায় পড়ার সময় রাজনের মা-বাবা উপস্থিত ছিলেন। রাজনের বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার নিরীহ ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে এই আসামীরা। আমার ছেলের হত্যার বিচার পেয়েছি। এই রায়ে আমি খুশি। আমি চাই এই রায় যেন বহাল থাকে।’

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর কাপ্তান বাজারের বাসা থেকে রাজন দোকানের উদ্দেশ্য বের হন। পরে তিনি বাসায় না ফেরায় অনেক খোঁজ করে তার পরিবার। পরদিন ১৪ অক্টোবর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর ইটখোলার চিতাখোলার পাশে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাজনের মা হোসনে আরা বেগম ১৬ অক্টোবর বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার থেকে আরও জানা যায়, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জয় নিহত রাজনের দোকানের কর্মচারী ছিল। তারা দোকানের ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। রাজন এটা জানতে পেরে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। তখন তারা যোগসাজশ করে রাজনকে হত্যা করে। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম (পুলিশ উপ-পরিদর্শক) আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।