শখেরবশে টার্কি পালন করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন পতœীতলা উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের নাদৌড় (হিন্দু পাড়া) গ্রামের অনূকুল চন্দ্র । সংসারিক কাজের ফাঁকে টার্কি পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। উপজেলার নাদৌড় গ্রামের ছেলে অনূকুল চন্দ্র বসত বাড়ির আঙ্গিনায় শখ করে ১০ টি আমেরিকান টার্কি মুরগি নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করেন টার্কি খামার। টার্কি মুরগি বিক্রি, ও ডিম বিক্রি করে মাসে ভাল টাকা আয় করছেন তিনি । আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী ।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে তিনি ঢাকা থেকে ২০বাচ্চা এনে নিজ বাড়ীতে পালন শুরু করেন। প্রতিটি টার্কি মুরগি একটানা ২২টি পর্যন্ত ডিম দেয়। দানাদার খাদ্য ছাড়াও কলমির শাক, বাঁধাকপি ও সবজি জাতীয় খাবার খায় টার্কি মুরগি। ৪ মাস পর থেকে খাওয়ার উপযোগী হয় টার্কি মুরগি।

একটি টার্কি মুরগির ওজন ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়। এখানে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হয় ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায়। এক মাস বয়সী বাচ্চা বিক্রি হয় জোড়া প্রতি প্রায় তিন হাজার টাকা। প্রতি হালি ডিম বিক্রি করা হচ্ছে ৮শ’ টাকা। টার্কি একটি বড় আকারের গৃহ পালিত পাখি। টার্কি ময়ূরের মতো পাখা মেললে অনেকটা ময়ূরের মতোই দেখা যায়। সুস্বাদু এই মুরগির রোগ বালাই তেমন হয় না। এর মাংসে অধিক পরিমাণে প্রোটিন ও কম পরিমাণে চর্বি রয়েছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতোই এ মুরগির মাংসের স্বাদ হওয়ায় এটির মাংসও বাজারে একই দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ১৭শ’ সালে যুক্তরাজ্য ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে টার্কি মুরগির জাত উৎপাদন করা হয়। উত্তর আমেরিকা টার্কি মুরগির উৎপত্তিস্থল। ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এখন টার্কি মুরগি পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে পশু-পাখি পালন অন্য দেশের তুলনায় সহজ। টার্কি প্রাণী সেরকম একটি সহনশীল জাত, যেকোন পরিবেশ দ্রুত এরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পাওে দেখতে অনেকটা ময়ূরের মতো ,ফেখম মেলে ধরলে খুব সুন্দর দেখায় ।

অনূকুল চন্দ্র বলেন,পত্র পত্রিকায়, টেলিভিশনে বিভিন্ন সময় টার্কি মুরগির উপর প্রতিবেদন দেখতাম। এতে আমার উৎসাহ বেড়ে যেত। ২০১৬ সালের শেষের দিকে ঢাকা থেকে প্রথমে ২০টি টার্কির বাচ্চা এনে পালন শুরু করি । কলমির শাক, বাঁধা কপি টার্কিদের বেশি পছন্দ। মাংস উৎপাদনের জন্য তাদের দানাদার খাবার দেয়া হয়। টার্কির রোগাবালাই খুবই কম। ডিম থেকে বাচ্চা হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দিতে শুরু করে। ৬ মাস বয়সী একটি মেয়ে টার্কির ওজন হয় ৬/৭ কেজি আর পুরুষ টার্কির ওজন হয় প্রায় ৮ কেজি। তিনি মনে করেন, বেকারত্ব দূর করতে টার্কি পালন খুবই ভাল পরিকল্পনা। তিনি তাঁর ফার্মের পরিধি ও বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা করতে সরকারী ঋণ সহায়তা দাবি করেন।

অনূকুল চন্দ্র আরও জানান আগামীতে আমি ২০০ বাচ্চা সংগ্রহ করবো এবং বড়ধরনের খামার করার পরিকল্পনা গ্রহন করছি , নিজ বাড়ীতে ৫০ টি ডিম বাচ্চা ফোটানোর জন্য প্রক্রিয়াজাত করেছি । পরীক্ষামূলক ভাবে পালন করে আমি দেখলাম এই মূরগি পলন করলে লসের সম্ভাবনা নেই সফল হওয়া যাবে । এলাকার অনেকেই আমার মূরগী দেখতে আসে এবং পরার্মশ চায় ।
পতœীতলা উপজেলা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষন কমিটির সাধারন সম্পাদক মাসুদ রানা জানান, অনূকুল চন্দ্রর দেখাদেখি পতœীতলায় এখন অনেকেই টার্কি মুরগি পালনে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। রোগবালাই ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি পালন করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।