ক্রিকেটের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বিজয়ী জাতি, বিশ্বে মাথা নিচু করে চলবো না, মাথা উঁচু করে চলতে চাই না। খেলাধুলায়ও বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চাই প্রতিযোগিতায় কোনো অংশে কম নই, আমরাও পারি। শনিবার (১০ মার্চ) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যুব গেম ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার বিভিন্ন জায়গায় ভালো করছে। প্রতিবন্ধীরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই। তারাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে সুনাম বয়ে আনছে। বিদেশে ক্রীড়াবিদরা বিভিন্ন অঙ্গণে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। ‘ইতোমধ্যে ফুটবল ও ক্রিকেটে বেশ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটে বাংলাদেশ কোর্য়ার্টার ফাইনালে খেলেছে, আমরা বিশ্বাস করি একদিন বিশ্বকাপ জয় করতে পারবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েরাও এখন পিছিয়ে নেই।এএফসি টুর্নামেন্টে মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আগামী বিশ্বকাপে নারী ক্রিকেটাররা জায়গা করে নিয়েছে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চাই প্রতিযোগিতায় আমরাও পারি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেমন অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনিভাবে ক্রীড়া ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই।খেলাধুলায় জড়িত থাকলে শিশুদের মনোবল দৃঢ় হয় এবং প্রতিযোগী মনোভাব সম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে ওঠবে। খেলায়াড়দের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেকেই আছে যারা হয়তো জীবনের প্রথমবার রাজধানীতে এসেছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে আরও নতুন নতুন খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে, যারা বিশ্বের আরও অনেক দেশের রাজধানী যাবে। সেখানে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।

ক্রীড়া ক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। তৃণমূল পর্যায় থেকে যাতে মেধাবী খেলোয়াড়রা উঠে আসে সেজন্য বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। আমার বিশ্বাস, এসব প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সুপ্ত প্রতিভা উঠে আসবে এবং খেলাধুলার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। সৃষ্টি হবে কর্মঠ ও দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন যুব সমাজ, যারা আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে। বক্তব্য শেষে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত যুব গেমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রতিযোগিতা আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত চলবে। উদ্বোধনের পর গেমসের মশাল প্রজ্বালন করেন কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী শুটার আসিফ হোসেন খান। গেমসের মাস্কট ‘তেজস্বী’।সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বেজে ওঠে জাতীয় সঙ্গীত। এক ঝলকে বাংলাদেশ যুব গেমস’- এর অডিও ভিজুয়াল ডিসপ্লের পর মাঠে প্রবেশ করেন আট বিভাগের ক্রীড়াবিদরা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাসকট প্যারেডের পাশাপাশি নাচ ও গান পরিবেশিত হয়, যেখানে অংশ নেন দেশসেরা কণ্ঠ ও নৃত্য শিল্পীরা। বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রদর্শিত হয় ডিসপ্লে। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল লেজার শো।অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বয়সী প্রতিযোগীদের নিয়ে আয়োজিত জাতীয় যুব গেমস সাড়া ফেলেছে সারা দেশে। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের লড়াই শেষে গেমসের চূড়ান্ত পর্ব হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।

গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ভবিষ্যতের ক্রীড়াবিদ খুঁজে বের করার মিশন শুরু হয়। ২৩ হাজার ২১০ জন অংশ নিয়েছেন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে। এখন বাছাই করা দুই হাজার ৬৬০ জন ক্রীড়াবিদ চূড়ান্ত পর্বে শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর অপেক্ষায়। শেষ পর্বে ১৫৯টি ইভেন্টে এক হাজার ১১২টি পদকের জন্য লড়াই করবেন তারা। লড়াই হবে ৩৪০টি স্বর্ণ, ৩৪০টি রৌপ্য এবং ৪৩২টি ব্রোঞ্জ পদকের জন্য।চূড়ান্ত পর্বের ডিসিপ্লিন গুলো হলো- অ্যাথলেটিকস, সাঁতার, ফুটবল, কাবাডি, বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, হকি, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, কুস্তি, উশু, শুটিং, আর্চারি, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং, দাবা, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো ও স্কোয়াশ। এরই মধ্যে একাধিক ডিসিপ্লিনের খেলা শুরু হয়েছে।