বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন জনগণের কষ্ট হবে। বর্তমান সরকার জনগনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করেছে। তারা জনগনকে ভয় পায়। মানুষের যে গনতান্ত্রিক অধিকার আছে, সেগুলিকে সরকার কোন গুরুত্ব দেয় না। যে কারনে সম্পূর্ন বেআইনিভাবে জাকির হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের হেফাজতে নির্মমভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই সরকার দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার বিরোধী কাজ করছে। নির্যাতন নিপীড়ন করে সরকার বিরোধীদলকে দমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাইছে।

তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি নিহত জাকির হোসেন মিলনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বুধবার সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইল মাঝুখান এলাকায় আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের নেতা জাকির হোসেন মিলন শহীদ হয়েছে। তার মতো আরো অনেক নেতাই নির্যাতনের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছে। জাকির হোসেনের বাবা নেই। আজ তার পরিবার অসহায় অবস্থায় আছে। তার স্ত্রী, দুই বাচ্চা, তার মা এক করুন অবস্থার মধ্যে বেঁচে আছে। একরকম শত শত হাজার হাজার পরিবার আছে বাংলাদেশে।

তিনি আরো বলেন, যারাই গনতন্ত্রকে দেখতে চায়, তাদেরই আজ নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তাই আমরা বার বার বলে আসছি, এই সরকার যতোদিন থাকবে ততোদিন জনগনের কষ্ট হবে। এখন জনগনের ঐক্য প্রয়োজন, সকলের ঐক্য প্রয়োজন। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগনকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় গাজীপুরে পৌছে তিনি নিহত ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেনের কবর জিয়ারত ও দোয়া এবং পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। তিনি নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং নিহতের পরিবারকে এক লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। এসময়ে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলান, সাধারন সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ।

প্রসঙ্গতঃ গত ৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে শাহবাগ থানা পুলিশ জাকির হোসেন ওরফে মিলনকে গ্রেপ্তার করে। তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত শনিবার রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। কেরানীগঞ্জ কারাগারে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে গত সোমবার সকালে তাকে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জাকির হোসেনকে মৃত ঘোষনা করেন। বিএনপি নেতা ও তার স্বজনদের অভিযোগ পুলিশের নির্যাতনে জাকির হোসেন মারা গেছেন। নিহত জাকির হোসেন তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি ছিলেন।