সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অনেকাংশে নির্বিকার বলে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে আইন অমান্য করে অভিনব কায়দায় পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ি টিলার মাটি কেটে পরিবেশ ধ্বংস করছে স্থানীয় সংঘবদ্ধ ভূমিদুস্য মাটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। দিবারাত্রি ওই অসাধু চক্রটি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমন অবৈধ কাজ দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিদুস্যদের কালো থাবায় বিলীন হচ্ছে ওই ইউনিয়নের চারিয়া এলাকার মুরাদপুর গ্রামের পাহাড়ি টিলাগুলো। ফলে এলাকার পরিবেশের মারাত্বকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে এবং ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কায় রয়েছে বিজ্ঞমহল।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটহাজারী বাজারে সানমুন টেইলার্স এর স্বত্তাধিকারী মো. শাহাজানের বাবা আযুব আলী প্রায় দুই যুগ আগে ভূমি অফিস থেকে বন্দোবস্তীর মাধ্যমে ৭৬ টাকার বিনিময়ে এক বছরের জন্য লিজ নিয়েছিল চারিয়া এলাকার মুরাদপুর গ্রামের আগা ফার্মের (মুরগির ফার্ম) পশ্চিমে ফজুর টিলাটি (পাহাড়ি টিলা)। কয়েকমাস আগে আযুব আলীর ছেলে মো. শাহাজান ওই টিলার মাটি বিক্রি করে দেয় স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদুস্য সি-িকেটের কাছে। সি-িকেটটির সদস্যরা অভিনব কায়দায় দিবারাত্রি টিলা থেকে এক্সেভেটর এর সাহায্যে মাটি কেটে তা ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটা ও ভিটা ভরাটে যোগান দিচ্ছে। এছাড়া এলাকার আশেপাশের লোকজনের কাছে দৈনিক ১৫/২০ ট্রাক মাটি সরবরাহ (৩৫০ফিট ট্রাক) করছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পাহাড়ি টিলার মাটি প্রতি ট্রাকে সি-িকেটটির সদস্যরা ৭০০ হাজার থেকে শুরু করে স্থান ভেদে ২ হাজারেও অধিক টাকা দরে বিক্রি করে দিচ্ছে । যদিও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পরিবেশ ধ্বংসের এ চিত্র দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে। এ কারণে এলাকার নির্মল প্রকৃতির পরিবেশ এখন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। অবশিষ্ট থাকা পাহাড় গুলোকে জরুরি ভিত্তিতে রক্ষা করা না হলে বর্ষা মৌসুমে এ অ লে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

স্থানীয়রা আরো বলেন, অবৈধভাবে বন বিভাগের পাহাড়ের পাদদেশের এসব মাটি বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত স্থানীয় সংঘবদ্ধ ভূমিদুস্য সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ফরিদ মুন্সি ও পাশ্ববর্তী এলাকার সিকদার পাড়া এলাকার বাবুল মেম্বারসহ আরো ৩/৪ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি এসব কাজ করেই চলেছে। মহলটি সরকারী পাহাড় থেকে মাটি কেটে বিপুল অংকের টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে।

সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ফরিদ মুন্সির কাছে অবৈধভাবে দিবারাত্রি মাটি কাটার সত্যতা সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি পাহাড়ের পাদদেশের মাটি কাটার সাথে জড়িত নয়। এসব কাজ করছে সিকদার পাড়া এলাকার বাবুল মেম্বার। পরক্ষণে বাবুল মেম্বারের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনিও মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে ফরিদ মুন্সি কাটছে বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে এ বিষয়ে কেউ অবহিত করেনি। যেখানে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।