ঢাকার মিরপুরের পীরেরবাগে অভিযানের সময় গোয়েন্দা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনার হোতাকে চিহ্নিত করার দাবি করেছে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা মঙ্গলবার গনমাধ্যমকে  বলেন, “হাসান (২৪) নামে এক যুবক এই হত্যাকাণ্ডের হোতা, তার সঙ্গে ছিল আরও অন্তত চারজন।”

সোমবার রাতে অভিযানে অংশ নেওয়া এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার সময় পুলিশও ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি করে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা দ্রুতই পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ হাসানের স্ত্রীসহ পরিবারের চার সদস্যকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। একতলা ভবনের ছাদে তিনটি ঘরের মধ্যে একটিতে থাকতেন হাসান। অন্য দুটি ঘরের ভাড়াটিয়াদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে ওই দুটি ঘরের ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ট্রাফিক পুলিশের দুই সার্জেন্টের মিরপুরের বাসা থেকে অস্ত্র চুরির তদন্তে পীরেরবাগের ওই বাড়িতে সোমবার রাতে অভিযানে গিয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ। গত ১০ জানুয়ারি দুই সার্জেন্টের অনুপস্থিতিতে তাদের ভাড়া বাসা থেকে দুটি পিস্তল চুরি হয়ে যায়। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে অংশ নেওয়া এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, কিছুদিন আগে একজন অপরাধীকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। তার তথ্যের ভিত্তিতে পীরেরবগের ওই বাসায় সার্জেন্টদের অস্ত্রগুলো আছে ধারণা নিয়ে সার্বিক তথ্য সংগ্রহ (রেকী) করতে ১০ জনের একটি দল সেখানে গিয়েছিল।

অভিযানের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “ভবনের কলাপসিবল গেইট খোলার জন্য কাউকে না পাওয়ায় একজনকে ডাকতে জানালার শেডে উঠতে চান অভিযানে থাকা একজন সহকারী কমিশনার। কিন্তু জালাল উদ্দিন তাকে উঠতে না দিয়ে নিজেই উঠে পড়েন।

“এরই মধ্যে ছাদ থেকে বেশ কয়েকটি ইট ছুড়ে মারলে জালাল উদ্দিন সেখান থেকে পড়ে যান। পরে উপর থেকে পরপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করলে অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যরা হকচকিয়ে যান। নিজেদের নিরাপদ জায়গা খুঁজে পাল্টা গুলি করেন। এরই মধ্যে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি জালাল উদ্দিনের মাথায় লাগে।” রক্তাক্ত জালালকে সঙ্গে সঙ্গে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান সহকর্মী কয়েকজন। অন্যরা পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে। এরই মধ্যে থানা পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল সেখানে উপস্থিত হয়। কিন্তু পরে তল্লাশি চালিয়ে কাউকে পায়নি। ওই কর্মকর্তার ধারণা, জালাল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই সন্ত্রাসীরা বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়।