রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ মিয়া ও উপাধ্যক্ষ মো. আবদুর রাজ্জাককে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফাতেমাতুল জান্নাত স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ওই তথ্য জানা গেছে।

আদেশে বলা হয়েছে, অবসরগ্রহণের সুবিধার্থে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের ওই দুই কর্মকর্তাকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিজ বেতন ও বেতনক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হলো।কলেজে দুর্নীতি-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ মিয়ার বিরুদ্ধে উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাকসহ সব শিক্ষক-কর্মচারী জোট বেঁধে গত ১০ ফেব্র“য়ারি থেকে আন্দোলন শুরু করেন। অবশ্য অধ্যক্ষকে ওএসডি করার খবর জানাজানি হওয়ার পরে দুপুরের দিকে কলেজের শিক্ষকেরা সভা ডেকে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের অনেক শিক্ষক-কর্মচারী উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাককে ওএসডি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সোচ্চার ছিলেন উপাধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ নিজের অপকর্ম ঢাকতেই উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাককে প্রভাব খাঁটিয়ে ওএসডি করেছেন।জানতে চাইলে উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমি কী অপরাধ করেছি জানি না। তবে ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজকে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছি, এটাই বড় পাওয়া।

গত ১৮ ফেব্র“য়ারিতে একটি পত্রিকায় ‘বরাদ্দ মানেই অধ্যক্ষের পোয়াবারো; কারমাইকেল কলেজ’ শিরোনামে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই দিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি ওই অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করেন।রংপুর দুদক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুদকের রংপুরের সহকারী পরিচালক সমর কুমার ঝাঁ ইতিমধ্যে কলেজের উপাধ্যক্ষসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের দুদক কার্যালয়ে ডেকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি কলেজে অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। সমর কুমার ঝাঁ বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।