কথা শুরু করেছিলেন স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু ক্রমেই ধরে এলো গলা। কণ্ঠে কান্নার সুর। ক্ষমা চাইলেন নিজের বিবৃতিতে। প্রশ্নোত্তর পর্বের এক পর্যায়ে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না।কান্নায় ভেঙে পড়ে স্টিভেন স্মিথ বললেন, আমি বিধ্বস্ত, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।বল টেম্পারিংয়ের পরিকল্পনার দায়ে নিষিদ্ধ অস্ট্রেলিয়ান তিন ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বৃহস্পতিবার ফিরেছেন দেশে। সিডনি বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে লিখিত বিবৃতিতে স্মিথ পুরো ঘটনার দায় নিয়েছেন নিজের কাঁধেই।আমার সব সতীর্থের কাছে, বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট ভক্তদের কাছে এবং সব অস্ট্রেলিয়ানের কাছে, যারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ, সবাইকে বলছি, আমি দুঃখিত। কেপ টাউনে যা হয়েছে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এর মধ্যেই তুলে ধরেছে। আজকে আমি এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই যে, অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক হিসেবে আমি পুরো দায় নিচ্ছি।আমি গুরুতর একটি ভুল করে ফেলেছি এবং এখন পরিণতিও আমার জানা আছে। এটা ছিল নেতৃত্বের ব্যর্থতা, আমার নেতৃত্বের। ভুলটা শুধরে দিতে এবং ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে সম্ভব সব কিছুই চেষ্টা করব আমি।

স্মিথের আশা, এই আঁধার পেরিয়ে এক দিন আবার তিনি আসবেন আলোয়।আমি জানি, এটির জন্য সারা জীবনই আমাকে আক্ষেপ করতে হবে। আমি পুরোপুরি হতাশ। আশা করি, একদিন আবার আমি সম্মান ও ক্ষমা অর্জন করতে পারব। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা, দলকে নেতৃত্ব দিতে পারা ছিল দারুণ গৌরব ও সম্মানের। দুনিয়ার সেরা খেলা ক্রিকেট। এটিই আমার জীবন, আশা করি আবারও জীবন হয়ে উঠবে। আমি দুঃখিত এবং সত্যিই পুরো বিধ্বস্ত।ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়বদ্ধতা আর নিজের পরিবারের অনুভূতির প্রসঙ্গ উঠতেই কান্নার দমকে নিজেকে সামলাতে পারলেন না স্মিথ। চোখের জলে ক্ষমা চাইলেন আবারও।প্রথমত, আমি সত্যিই ভীষণভাবে দুঃখিত। ক্রিকেট খেলাটাকে আমি ভালোবাসি। বাচ্চাদের বিনোদন দিতে ভালোবাসি। অসাধারণ যে খেলাটাকে আমি ভালোবাসি, চাই বাচ্চারা সেই খেলাটায় আসুক।কখনও প্রশ্নবিদ্ধ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এটাই ভাবা উচিত যে সিদ্ধান্তটি কাদেরকে প্রভাবিত করতে পারে। বাবা-মাকে প্রভাবিত করতে পারে আমার বাবাকে যেমন দেখছি, মাকে দেখছি, এটা ভীষণ কষ্টের।আমি ¯্রফে বলতে চাই, অস্ট্রেলিয়াকে, ভক্তদের, সবাইকে যে বেদনা আমি দিয়েছি, তার জন্য আমি দুঃখিত। এই যন্ত্রণা ভয়ঙ্কর এবং আমি সত্যিই দুঃখিত।স্মিথের মতোই এক বছরের নিষিদ্ধ ডেভিড ওয়ার্নারও ফিরেছেন সিডনিতে। তবে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। এই ওপেনার ক্ষমা চাওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে।একটি বড় ভুল হয়েছে, যেটি ক্ষতি করেছে ক্রিকেটের। আমার সম্পৃক্ততার জন্য ক্ষমা চাইছি এবং এটির দায় নিচ্ছি। খেলাটি এবং ভক্তদের যে যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে, সেটি আমি অনুধাবন করছি। আমাদের সবার ভালোবাসার খেলা; যে খেলাটাকে ছেলেবেলা থেকে ভালোবেসেছি, সেই খেলাকে কলঙ্কিত করেছে এটি।আপাতত কয়েকটা দিন একটু দম নিতে চাই। সময় কাটাতে চাই পরিবার-পরিজন, বন্ধু ও বিশ্বস্ত পরামর্শকদের সঙ্গে। কদিনের মধ্যেই সবার সামনে আসব।
মাঠে বল টেম্পারের দায়িত্ব ছিল যার ওপর, সেই ক্যামেরন ব্যানক্রফট ফিরেছেন নিজ শহর পার্থে। লিখিত বক্তব্যে দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন তিনিও।হ্যাঁ, আমি মিথ্যা বলেছিলাম। শিরীষ কাগজের ব্যাপারে মিথ্যা বলেছিলাম। আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। ওই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। আমি দুঃখিত। ক্রিকেট খেলাটা আমি ভালোবাসি। দেশের হয়ে খেলা, রাজ্যের হয়ে খেলার চেয়ে গর্বের কিছু আমার কাছে আর নেই। আমি সত্যিই দুঃখিত এবং অনুতপ্ত। বিশ্বজুড়ে আমাকে যারা অনুসরণ করেছেন, বিশেষ করে বাচ্চারা, সবার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।