৪২ তম ‘ভূমি দিবস’ উপলক্ষে গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের স্মরণে আজ শনিবার একদিনের শোক ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন। এ জন্য শনিবার সারা দেশে স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের বিভিন্ন অংশে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ফিলিস্তিনের ৪২তম ‘ভূমি দিবস’ উপলক্ষে ওই বিক্ষোভ ডাকা হয়। সেখানেই হাজারো বিক্ষোভকারীর ওপর কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছোড়ে ইসরায়েলি সেনারা।

ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী মারণাস্ত্র ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে ১৬ জন নিহত হন এবং ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হন। হামলায় নিহতরা হলেন—মোহাম্মাদ নাজ্জার (২৫), মাহমুদ মুয়াম্মার (৩৮), মোহাম্মদ আবু ওমর (২২), আহমেদ ওডেহ (১৯), জিহাদ ফ্রেনেহ (৩৩), মোহাম্মাদ সাদী রাহমি (৩৩), আবদেলফাত্তাহ আবদেলনবী (২২) ও ইব্রাহিম আবু সাহার (২০)।  অন্য নিহতরা হলেন- আবদেলকাদের আল-হাওয়াজিরি, সারি আবু ওদেহ, হামডান আবু আমশেহ, জিহাদ আবু জামুস, বাডের আল সাব্বাগ এবং নাজী আবু হজয়ার। এদের বয়স জানা যায়নি।  এর আগে শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ শুরুর আগে গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় ওমর ওয়াহেদ আবু সামুর (৩১) নামের এক কৃষক নিহত হন।

১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চে এই দিনটিতে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই দিনটি ‘ভূমি দিবস’ হিসেবে উদযাপন হয়ে আসছে। এদিকে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে ১৬ জনকে হত্যার ঘটনায় গতকাল শুক্রবারই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুয়েতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।  ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে একটি বিবৃতি দিয়েছে জর্ডান সরকার। জর্ডান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আর মোমানি বলেন, ‘গাজায় আজ যা হয়েছে তার জন্য দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েলই দায়ী। ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার নষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র ব্যবহার করার কারণেই এমনটা হয়েছে।’ একই ধরনের বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক ও কাতারের সরকারও।