সিলেট নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া এলাকায় মা রোকেয়া বেগম ও ছেলে রবিউল ইসলামকে খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন মূল অভিযুক্ত তানিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোর রাতে কুমিল্লার তিতাস এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই’র) একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই’র) বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করীম মল্লিক রেজা তানিয়াকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রবিবার রাতে সিলেট নগরী থেকে অভিযান চালিয়ে তানিয়ার স্বামীকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার তিতাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় তানিয়াকে।

তিনি আরও জানান, আজ দুপুর ২টা ৩০মিনিটে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই’র) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে। এর আগে, গত মঙ্গলবার শাহপরান থানার মুর্তিচক গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে নজমুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি আটক করে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা সিলেটে নিজ শয়নকক্ষে খুন হওয়া মা ও ছেলে হত্যার ঘটনায় নাজমুল জড়িত রয়েছেন। তাকে সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রোকেয়া খানম। শুনানি শেষে বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো আসামির ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে, গ্রেফতারকৃত তানিয়া মিরাবাজার ডাবল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের সন্দেহের তালিকায় থাকা একজন। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি তানিয়ার (১৬) সঙ্গে পার্লার ব্যবসায়ী রোকেয়া বেগমের বাকবিতণ্ডা হয়। তানিয়া তার বাসায় প্রায় ৬ মাস ধরে কাজ করছিল। বাকবিতণ্ডার পর রোকেয়ার বাসা থেকে চলে যায় তানিয়া। এর ২/৩ দিন পর স্থানীয় যুবক সুমন ওরফে কাঞ্চা সুমন, একে পাপলু ও শিপনকে নিয়ে রোকেয়ার বাসায় যায় তানিয়া। এ সময় তার সঙ্গে ওই যুবকদের কথাকাটাকাটি হয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে স্থানীয়রা উদ্যোগ নিলেও কোনো লাভ হয়নি। পরে তারা রোকেয়াকে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিতালি ১৫/এ নম্বরের তিনতলা বাড়ির নিচ তলায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন রোকেয়া বেগম। গত ১ এপ্রিল রবিবার বাড়ির ভেতরে থাকা রোকেয়া বেগমের পাঁচ বছরের মেয়ে রাইসার কান্না ও পচা গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে দুপুরে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনের লাশ উদ্ধার করে। ওই দিন রাতেই সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহত রোকেয়া বেগমের ভাই জাকির হোসেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করা হলেও পুলিশের ধারণা এ ঘটনার সঙ্গে নিহত রোকেয়া বেগমের গৃহপরিচারিকা তানিয়াসহ চারজন জড়িত থাকতে পারে।