সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আমদানীকৃত চালের পরিবর্তে হতদরিদ্রদের মাঝে লোকাল চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে খোদ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপ‌জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) পর্যন্ত আদিতমারী উপজেলার ৪ জন ডিলার তাদের চাল উত্তোলন করতে না পারায় বঞ্চিত রয়েছেন সেখানকার হতদরিদ্র পরবিারগুলো। চাল উত্তোলন না করা ডিলাররা হলেনঃ উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের বাদশা ফরহাদ বিপ্লব,দুর্গাপুরের আসাদুজ্জামান নান্নু, আমিনুর রহমান ও সারপুকুরের হাছান আলী। এদের মধ্যে সারপুকুরের ডিলার হাছান ১৪০ বস্তা পেয়েছেন। এখনও বাকি রয়েছে একশ বস্তা চাল। জানাগেছে,উপজলোর ৮টি ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূিচতে ২৮ জন ডিলারের মাধ্যমে উপজেলার ১১ হাজার ১৫২টি কার্ডধারীদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল হতদরদ্রি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়। বছরের ৫ মাস চলে সরকারের এ কর্মসূচি। মার্চ মাস বিতরণ শেষে এপ্রিল মাসের চাল বিতরণের সময় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী, খাদ্য গুদামগুলোতে চাল মজুদ না থাকায় সরকার আমদানীকৃত চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে বিতরণের উদ্দ্যোগ নেয়। সে অনুযায়ী আদিতমারীতে ২৫০ মেঃটন আমদানীকৃত চাল গোডাউনে চলে আসার কথা। কিন্তু উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমার সাথে আতাত করে আমদানীকৃত চালের পরিবর্তে লোকাল চাল হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়। আমদানীকৃত চালরে মান ভাল ও বাজারে এসব চালের দাম বেশী হওয়ায় রাতারাতি পরিবর্তন করে লোকাল চাল বিতরণ করার অভিযোগ উঠেছে। আর এসব চাল থেকে খাদ্যবিভাগের কর্মকর্তারা হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে সোমবার সরেজমিন উপজলোর পলাশী ইউনিয়নের ডিলার এরশাদ হোসেন ভরসার গোডাউনে গিয়ে দেখোগছে, সেখানে আমদানীকৃত কোন চাল বিক্রয়ের জন্য দেয়া হয়নি। সেখানে হতদরিদ্ররের মাঝে নিম্নমা‌নের লোকাল চাল বিতরণ করা হচ্ছ। আবার এসব চাল অনেককেই বাধ্য হয়ে নিতে হচ্ছে। এসময় ভরসা জানান,গোডাউন থেকে অনেকটা জোরর্পূবক এসব চাল দেয়া হয়েছে। একই দৃশ্য দেখা যায়, পলাশী ইউনিয়নের আরেক ডিলার শফিকুল ইসলামের গোডাউনে। সেখানে লোকাল চালের পাশাপাশি আমদানীকৃত কয়েকটি চালের বস্তা দেয়া হয়েছে তাকে। তিনি লোকাল ও নিম্নমানের এসব চাল নিতে অনীহা প্রকাশ করলেও তাকে জোরপূর্বক এসব চাল ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা দিয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন।

এদিকে আমদানীকৃত চালের পরিবর্তে লোকাল চাল হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণের ঘটনাটি ফাঁস হওয়ায় নড়ে চড়ে বসেন খাদ্য বিভাগের লোকজন।এসব অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) কাণিজ ফাতেমার মোবাইল ফোনে (০১৭১৬৯৮৫০৪৬) একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ না করায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আদিতমারী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শামসুল আলম এ প্রসংগে বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।