ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গুগল, ইউটিউব ও ফেসবুকসহ অন্যান্য সেবাপ্রদানকারী কোম্পানি থেকে ভ্যাট, ট্যাক্সসহ সব ধরনের রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।বুধবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে অর্থসচিব, আইন সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্যসচিব, বাংলদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, এনবিআর চেয়ারম্যান, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ নিউজ পেপারস ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, গুগল, ফেসবুক, ইয়াহু এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে গত ৯ এপ্রিল রিট দায়ের করেন হাইকোর্টের ছয় আইনজীবী। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পপ্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।আদেশে সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ইয়াহু, ই-কমার্সের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম আমাজন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবসহ ইন্টারনেটভিত্তিক আন্তর্জাতিক সব প্লাটফর্ম থেকে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি, লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের লেনদেন থেকে উৎসে কর, শুল্কসহ সব ধরনের রাজস্ব আদায় করতে বলা হয়েছে।

বিবাদীদের আগামী ২৫ জুনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে বলে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব জানিয়েছেন।গুগল-ফেইসবুক-ইউটিউবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ পথে যাচ্ছে বলে তা তদারকির মধ্যে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছিল।এর মধ্যেই গত ৯ এপ্রিল বিষয়টি নিয়ে আদালতের নির্দেশনা চেয়ে মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লবসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন।অ্যাডভোকেট পল্লব বলেন, প্রযুক্তির যুগে গুগল, ফেইসবুক এখন প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এখন এসব প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দেখতে আগ্রহী। দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও।এ সুযোগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে এদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার নিয়ে যাচ্ছে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট বিশ্বের নামীদামি প্লাটফর্মগুলো। কিন্তু সরকার তার প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এখন এসব প্লাটফর্ম থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে।কদিন আগেই এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন কয়েকজন সাংবাদিক।

তার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করব, এই অর্থ কি স্বচ্ছতার সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে? তাদের যে আয়, তার ওপর কর বসাব। এটা সবখানেই দিচ্ছে, এখানে দিচ্ছে না।অ্যাডভোকেট পল্লব বলেন, রুল জারি ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি গত ১০ বছরে অর্থাৎ ২০০৭ থেকে এখন পর্যন্ত এসব প্লাটফর্ম বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ আয় করেছে, তা নিরূপণ করতে এবং নিরূপিত আয়ের বিপরীতে কী পরিমাণ উৎসে কর, শুল্ক ও রাজস্ব আদায়যোগ্য ছিল, তা নিরূপণ করতে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।