সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল না করে সংস্কার করা উচিত বলে মনে করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শনিবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী’র বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে কোটা দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। “কোটা ব্যবস্থা নিয়ে ছাত্রদের মনে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল, তাদের মনে কষ্ট, দুঃখ ছিল। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।” কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যে সম্প্রতি সংসদে প্রধানমন্ত্রী কোটা পদ্ধতিই থাকবে না বলে ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি উপলব্ধি করে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছেন। তিনি সাহস নিয়ে সঠিক কাজ করেছেন উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, তবে একেবারেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ঠিক হবে না। তা কিছুটা কমানো হলে মোটামুটি ভালো হবে। আগামীতে সরকারি চাকরিতে মেধাবীরাই স্থান পাবে। তাদের হাত ধরে দেশ যেমন এগিয়ে যাবে, তেমনি দেশ থেকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি দূর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ। জাতীয় পার্টি এখনও বিরোধী দল দাবি করে এরশাদ বলেন, “আমরা কারো সাথে নেই, একাই আছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে। সংসদীয় তিনশ আসনেই একক প্রার্থী দেবে।”

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে, বর্তমানের তাদের অবস্থা নাজুক। জনগণের আস্থা হারিয়ে সরকার এখন দিশেহারা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ। আর বিএনপির অবস্থা ছিন্নভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা মাথায় নিয়ে কারাভোগ করছেন। বিএনপি এখন নেতাশূন্য দল। “আগামী নির্বাচনে তারা অংশ নিতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।” বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে জনবিছিন্ন উল্লেখ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি এখন জনগণের একমাত্র আস্থার দল; এই মুহূর্তে নির্বাচন করার মতো জনপ্রিয় দল। তাই একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে অংশগ্রহণ করবে।

“নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ ভোট দিয়ে জাতীয় পার্টিকেই দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার অর্পণ করবে বলে আমার বিশ্বাস।” শনিবার নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঙ্গালীপুর সরকার পাড়ায় জাতীয় পার্টির এক কর্মীসভায় বক্তব্য দেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ। এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার, বিরোধী দলীয় হুইপ ও নীলফামারী জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক শওকত চৌধুরী, জেলা সদস্য সচিব সাজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মহিনুল ইসলাম সুজন,বিশেষ প্রতিনিধি॥