বিকালে বর্ষবরণের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের এই প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘‘ নতুন বছর হোক মিথ্যার বিপরীতে সত্যের বিজয়ের বছর, নতুন বছর হোক স্বৈরাচারের গ্লানি মোচন করে গণতন্ত্রের বছর, নতুন বছর হোক জনগনের বিজয়ের বছর, নতুন বছর হোক বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠার বছর। এই প্রত্যাশা আমাদের।”

‘‘আমরা শপথ নিতে চাই এই নতুন বছরের প্রথম দিনে – আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করে, দেশে একটি নির্বাচনকালীন নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে, সংসদ ভেঙে দিতে বাধ্য করে আমরা জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো। এই বছরকে আমরা গণতন্ত্রের বিজয় বছর, বেগম খালেদা জিয়ার বিজয়ের বছর ও জনগনের বিজয়ের বছর হিসেবে দেখতে চাই।”

খালেদা জিয়ার কারাবাসের প্রসঙ্গে টেনে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘ আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে কথা বলছি। আমরা যখন প্রতিবছর নতুন বছরকে বরণ করে নেই, প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে যিনি উপস্থিত থাকতেন তিনি হলেন দলের চেয়ারপারসনে গণতন্ত্রের মা দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে নেই। তাকে একটি মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।”

‘‘ যখন নতুন বছর করে বরণ করছি তখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুদুর লন্ডনে বাধ্য অবস্থান করছেন। আজকে এই মঞ্চে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। তার মাতা দুইদিন আগে মৃত্যুবরণ করায় তিনি এখন ঠাকুরগাঁওয়ে আছেন।এরকম একটি পরিস্থিতিতে বেদনা নিয়ে এই নতুন বছরকে বরণ করছি।”

বিগত বছর দেশের জন্য ‘হতাশা, অন্ধকার ও স্বৈরাচারী শাসনের’ বছর হিসেবে অভিহিত করে দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে বাংলা নতুন বছরে দেশবাসীসহ দলের সর্বস্তরে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘‘ দেশ আজ অশুভ শক্তির কবলে বন্দি। শুভ আসবে কবে জানি না। তবে শুভ দিন আনতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অশুভ শক্তির সঙ্গে একটা যুদ্ধে যেতে হবে। নাহলে কিছু হবে।”

বিকাল সাড়ে ৩টায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস এর উদ্যোগে ১৪২৫ বঙ্গাব্দকে বরণের এই অনুষ্ঠান হয়। সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বের পর কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীনসহ শিল্পীরা বৈশাখের বার্তা সম্বলিত বিভিন্ন গান পরিবেশন করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত গীতিকার ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় ‘সংস্কৃতি থেকে সমৃদ্ধি’ গীতিনাট্য পরিবেশিত হয়। এর সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন কিসলু।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহসভাপতি বাবুল আহমেদ, মনিরুজ্জামান মনির, জাহাঙ্গীর শিকদার, শায়রুল কবির খান,জাহাঙ্গীর আলম রিপন, চৌধুরী মাজহার আলী শিবা সানু, জাকির হোসেন রোকনসহ জাসাস ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।