দুর্নীতির পৃথক চারটি মামলায় ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের সাবেক পাঁচ কর্মকর্তার ৬৮ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি ওই পাঁচ কর্মকর্তাকে চার মামলায় ১ কোটি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া আন্য দুই ব্যবসায়ীকে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। আজ ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওই ব্যাংকটির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমামুল হক নামের এক আসামি খালাস পেয়েছেন।

দন্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন- ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. হারুন, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম মাহমুদুল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) কামরুল ইসলাম, সাবেক অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) ফজলুর রহমান, নূর অ্যান্ড সন্স-এর মালিক তরিকুল ইসলাম ও মেসার্স আফাজউদ্দিন ট্রেডার্সের মালিক সালাহউদ্দিন।

এ বিষয়ে আদালতের পেশকার মোককারম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রায় ঘোষণার সময় এ চার মামলার আসামি ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা (ডিজিএম) পরিচালক ইমামুল হক উপস্থিত ছিলেন। তিনি চার মামলাতেই খালাস পেয়েছেন। এছাড়া বাকি সবাই পলাতক রয়েছেন।

মামলার নথি সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫-০৬ সালে ওরিয়েন্টাল ব্যাংক থেকে আনুমানিক ৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর বিভিন্ন থানায় মোট ৩৪টি মামলা করেন। এর মধ্যে ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক সৈয়দ আহমেদ রাজধানী মতিঝিল থানায় চার মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি দুদক কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ওই সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মেসার্স আফাজউদ্দিন ট্রেডার্সের নামে যে হিসাব খোলা হয়, তা শনাক্তকারী আলম ট্রেডার্সের মালিক আলমকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহ মো. হারুনের নির্দেশই হিসাব খোলা হয়েছে। তাঁর নির্দেশেই ব্যাংকটির কর্মচারী-কর্মকর্তারা হিসাব খোলার ফরমে স্বাক্ষর করেন। আসামি শাহ মো. হারুন ক্ষমতার অপব্যবহার করেই প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি সালউদ্দিনের মালিকাধীন মেসার্স আফাজউদ্দিন ট্রেডার্সের নামে ভুয়া শনাক্তকারী দিয়ে হিসাব খোলান এবং আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

জানা গেছে, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সংকটে পড়ে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। পরে ২০০৯ সালে মালিকানা হাতবদলে ব্যাংকটির নতুন নাম হয় আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের সব দায় ও সম্পত্তি গ্রহণ করে এই ব্যাংক।