রাউল কাস্ত্রোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মিগেল দিয়াস-কানেলই হতে যাচ্ছেন কিউবার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের অধিবেশনে বুধবার কিউবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যরা ৫৭ বছর বয়সী এ প্রকৌশলীকে প্রেসিডেন্ট পদের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে বেছে নেন।বিবিসি জানিয়েছে, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যরা মিগেল দিয়াস-কানেলের মনোনয়ন প্রশ্নে ভোটাভুটি শেষ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে রাউলের স্থলাভিষিক্ত ঘোষণা করা হবে বৃহস্পতিবার।এক দশকের দায়িত্ব পালন শেষে এদিনই মিগেলের কাছে নেতৃত্বের ব্যাটন হস্তান্তর করবেন ৮৬ বছর বয়সী রাউল, যার মাধ্যমে চার দশক পর কিউবার প্রেসিডেন্ট হবেন এমন একজন, যার নামের শেষে ‘কাস্ত্রো’ নেই।

প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে গেলেও ২০২১ সালের পরবর্তী কংগ্রেস পর্যন্ত কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান থাকবেন রাউল। ফলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রেও তার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থাকবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।শারীরিক অসুস্থতার জন্য ২০০৮ সালে ভাই ফিদেল দায়িত্ব ছেড়ে দিলে কিউবার প্রেসিডেন্ট হন রাউল। ১৯৫৯ সালের বিপ্লবে মার্কিন মদদপুষ্ট একনায়ক বাতিস্তাকে উৎখাতের পর পাঁচ দশক কিউবা ছিল ফিদেলের নেতৃত্বে।তিনি ১৯৭৬ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সংবিধানে প্রেসিডেন্টের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়ায় ওই বছরই পদ বদলে বসেন রাষ্ট্রের শীর্ষপদে। যার পরিসমাপ্তি ঘটে ভাইয়ের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর। কাস্ত্রো ভ্রাতৃদ্বয়ের পর মিগেলই হলেন একদলীয় সোশালিস্ট রাষ্ট্র কিউবার নতুন প্রেসিডেন্ট, যার হাতে ক্ষমতা সপে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছেন কিউবা বিপ্লবের সময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া গেরিলা প্রজন্ম।তুলনামূলক তরুণ এ নেতাকে রাউলের শুরু করা অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াসহ প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা।১৯৬০ সালে জন্ম নেওয়া মিগেল তরুণ বয়সেই যোগ দেন সান্তা ক্লারার ইয়াং কমিউনিস্ট লীগে। স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িৎ প্রকৌশল পড়ানোর সময় থেকে তার বিকাশ দৃশ্যমান হতে থাকে। ৩৩ বছর বয়সে তিনি ইয়াং কমিউনিস্ট লীগের দ্বিতীয় সম্পাদক নির্বাচিত হন।মিগেলের ‘মতাদর্শগত দৃঢ়তা’র প্রশংসা শোনা গেছে রাউলের কণ্ঠেও।ফিদেলের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব থাকলেও রাউল সে অবস্থা থেকে সরে এসে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কিউবানদের ওপর নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করলেও কূটনৈতিক সম্পর্কে এখনও বড় ধরনের রদবদল করেননি।নতুন প্রেসিডেন্টকে ভেনেজুয়েলাসহ লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে হবে, নজর দিতে হবে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনেও। গত মাসে নির্বাচিত ৬০৫ সাংসদ বুধবার হাভানার কনভেনশন সেন্টারের অধিবেশনে নতুন প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি প্রভাবশালী স্টেট কাউন্সিলরদেরও নির্বাচিত করেছেন। এ কাউন্সিলররাই রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে দায়িত্ব পালন করবেন।