কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্রদের বা একটা শ্রেণির অধিকার আদায়ের যে বিচ্ছিন্ন আন্দোলন, এটা করে কিন্তু কোনো লাভ হবে না; যদি না গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করা হয়। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রশ্নে সকল রাজনৈতিক দলকে একমত হওয়ার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) প্রতিবাদ সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সভা হয়।সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের প্রতিনিধিত্ব থাকলেই তো সেই সরকার জনগণের কথা চিন্তা করবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার চাই, কিন্তু সেই গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার কীভাবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। নির্বাচন কীভাবে হবে। অবশ্যই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। এর বাইরে নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হবে না, গ্রহণযোগ্য হবে না।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাগ করে বলেছেন, ঠিক আছে, আমরা কোটাপদ্ধতি তুলে নিলাম।উনি এটা করতে পারেন না। তাঁর এখতিয়ার নেই। সংবিধানের বাইরে এই ঘোষণা। ছাত্ররা তা চায়নি। ছাত্ররা চেয়েছিল সংস্কার। তা না করে তিনি পুরোপুরি কোটাপদ্ধতি উঠিয়ে দিয়েছেন।মির্জা ফখরুল বলেন, এর ফলে এখন পর্যন্ত গেজেট হয়নি। অন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। অন্যদিকে যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে। তাঁদের চোখ বেঁধে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে গেছেন। আবার ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে তাঁদের ফেরত দিতে হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সাজানো নীল নকশা নিয়ে এগুচ্ছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন না করার যে নীল নকশা, আজ সেই অবস্থা ভয়াবহভাবে আছে। তাহলে কেনো এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আবার ওই জায়গায় (নির্দলীয় সরকার) এসে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে না। এটা অবশ্যই জনগণের সামনে বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।তিনি বলেন, আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে সব রাজনৈতিক দল ও সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে আহবান রাখতে চাই, আসুন আমরা একটা প্রশ্নে একমত হই। সেই প্রশ্নটি হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। এ বিষয়টাতে একটা জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করা প্রয়োজন।তিনি বলেন, এটা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য শুধু নয়, বাংলাদেশের মানুষের সত্যিকার অর্থে মুক্তির জন্য। অন্যথায় এই ফ্যাসিস্ট সরকার দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করি না।

সব রাজনৈতিক দলের কাছে আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকবার বলেছি, আবারও বলছি, আসুন, আমরা একটা প্রশ্নে অন্তত একমত হই। সেই প্রশ্নটা হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। এই বিষয়ে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন।

এ্যাব-এর সভাপতি প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আনহ আখতার হোসেইন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, সাংবাদিক নেতা সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, এ্যাবের আলমগীর হাছিন, রিয়াজুর রহমান রিজু, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।