কোনো দন্ডিত অপরাধী মুক্তির শর্তে আগামী নির্বাচন নয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।শনিবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

হাসানুল হক ইনু বলেন, কোনো দল দন্ডিত অপরাধীদের মুক্তির শর্তে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে সরকার এতে সায় দিবে না। এই শর্ত একটা অরাজনৈতিক। এই শর্ত মেনে নেয়া মানে হচ্ছে বাংলাদেশে অপরাধতন্ত্রকে মেনে নেয়া। বিএনপি সেই আঘাতটাই হানতে চাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দ-িত অপরাধীর মুক্তির প্রশ্নটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছে। তারা নির্বাচন বর্জনের পায়তারা করছেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পর দেশ কোনো পথে যাবে এই প্রশ্ন মীমাংসা হবে। এই মীমাংসা মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ টিকবে কি টিকবে না সেটা নির্ধারিত হবে। কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশ আর পেছন দিকে যেতে পারে না। নির্বাচনে বিএনপির সেনা মোতায়েনের দাবি সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবিতে বিএনপি সোচ্চার হয়েছে। অথচ দলটি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ফল না মেনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ২০০৮ সালে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সেনা মোতায়েন করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করেছিল। সেই ভোটের ফলাফল বিএনপি মানেনি। সুতরাং বিএনপির কাছে ভোট বড় কথা নয়। তাদের এজেন্ডা হচ্ছে দেশকে আবারও পাকিস্তান পন্থার পথে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সামনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা রাজনৈতিক কর্তব্য রয়েছে। যে কোনো মূল্যে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে। সাংবিধানিক সরকারই দেশের মঙ্গলজনক। সাংবাদিকদের বেতন বাড়াতে ওয়েজ বোর্ড গঠনের পর মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, মহার্ঘ্য ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করেছে। সেটি প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। এপ্রিলের মধ্যেই সেটি জারি করা সম্ভব হবে।সংবাদকর্মীদের বেতন বাড়াতে গত ২৯ জানুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হলেও আগের মতো মহার্ঘ্য ভাতা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন মহার্ঘ্য ভাতার দাবি জানিয়ে আসছিল। ওয়েজ বোর্ড নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনাও করে আসছিলেন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা।ইনু বলেন, ওয়েজ বোর্ড নিষ্পত্তি করবেন চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যরা। যখন তারা নিষ্পত্তি করবে তথ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। মনে রাখতে হবে, ওয়েজ বোর্ড তৈরির ব্যাপারে গঠন পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা। এর বাইরে ভূমিকা নেই। ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, তিন হাজার পত্র-পত্রিকার মধ্যে প্রায় ৯০/৯১টি অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করছে।তাহলে বাকিরা কেন করল না? আমরা তো সাংবাদিকদের নিয়ে গঠিত তদারকি সেলের কাছে দায়িত্ব দিয়েছি। যারা করল না, সেখানে কেন ঘটনা ঘটছে, সেটা নিষ্পত্তি করতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করছি।

ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণেও বোর্ডের চেয়ারম্যান হাত দেবেন বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের মতো কোনো ধারা বা উপধারা থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।