তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের রিপোর্ট একতরফা, নীতিহীন, ভিত্তিহীন ও মনগড়া। সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে বিশেষ করে তথ্য, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়ে এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ। আমরা এই রিপোর্ট সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।

রোববার সচিবালয়ে নিজ দফতরে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বাংলাদেশের যে দু’টি বেসরকারি সংস্থার বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেগুলো হচ্ছে- অধিকার ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র। এই দু’টি সংস্থা সম্পর্কে হাসানুল হক ইনু বলেছেন,অধিকার সংগঠনটি রিপোর্ট দিয়েছিল, শাপলা চত্বরে হেফাজতের হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। পরে সরকার থেকে তাদের কাছে মৃত ব্যক্তিদের তালিকা চাওয়ার পরেও তারা তালিকা দিতে পারেনি।পরবর্তীতে দেখা গেছে যাদের মৃত বলা হয়েছিল তারা বেঁচে আছে। অধিকার সংগঠন যে কোনও ভালো রিপোর্ট দেয় না তার প্রমাণ এটাই।তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলেছে, গত বছর বাংলাদেশে ১৬২ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।অপরদিকে অধিকার সংগঠনটি বলেছে গত বছর বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ১১৮ জন। এই দু’টি সংস্থার নিজেদের প্রতিবেদনের মধ্যেই অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। এই দুটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই গত ২০ এপ্রিল শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এই রিপোর্ট দেয়।আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি।তিনি দাবি করেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সম্পর্কে রিপোর্টে যা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়। বিচারপতি এসকে সিনহা নিজেই নিজেকে নানাবিধ বিতর্কে বিতর্কিত করে রিজাইন দিয়ে চলে গেছেন।

জামায়াত সম্পর্কে প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তাও সঠিক নয় বলে দাবি করেন হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, জামায়াত কোনও এনজিও নয়।জামায়াত ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধন হারিয়েছে। কিন্তু রাজনীতিতে ক্রিয়াশীল রয়েছে।বাংলাদেশের বিচারকরা ঘুষ খানÑমার্কিন প্রতিবেদনটিতে করা এমন মন্তব্য একটি হালকা মন্তব্য বলে অভিহিত করেন তথ্যমন্ত্রী। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে,২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার ইস্যু ছিল সরকারি নিরাপত্তাবাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, নির্যাতন, বেআইনি আটক ও গুম এবং নাগরিক স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ।এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেন, সরকার কোনওভাবেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-কে সমর্থন করেনা। কাজেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ে যারা জড়িত তাদের দায়মুক্তি দেওয়ার কোনও এখতিয়ার কারও নাই।বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যম ও এনজিও কর্মকান্ডে বাধা দেওয়া হচ্ছেÑপ্রতিবেদনের এমন মন্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল,মানবাধিকার সংগঠন, দুই হাজারের বেশি এনজিও ও স্বাধীন গণমাধ্যম কাজ করছে। বাংলাদেশের অনলাইন গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের কোনও বিরোধ সৃষ্টির ঘটনা ঘটেনি।বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের বেড়ে যাওয়া সম্পর্কে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা আছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১৮ বছরের কমবয়সী বালিকাদের বিবাহ নিষিদ্ধ করে আইন চলমান আছে।