নদী, পাহাড়, ঝরনা দেখতে পর্যটকদের পছন্দের জায়গা খাগড়াছড়ি। রাঙামাটির সাজেকে যেতে হয় এ রাস্তা দিয়েই। সাজেক যাওয়ার পর্যটক যথেষ্ট থাকলেও খাগড়াছড়ির হোটেল-মোটেলগুলো প্রায় খালি পড়ে রয়েছে। এর ফলে হোটেল-মোটেল মালিকসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। হোটেলের এমন হাল হলেও শহরের রেস্তোরাঁ এবং সাজেকমুখী পিকআপসহ অন্যান্য যানবাহনের বুকিং রয়েছে যথেষ্ট। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে ১২০টি হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে। গত বছর পাহাড়ধসের পর থেকে হোটেল-মোটেলগুলোতে বুকিং নেই বলেই চলে।

খাগড়াছড়ি হোটেল গাইরিংয়ের মালিক অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, তাঁর হোটেলে এসি, ননএসি, ডাবল ও সিঙ্গেল মিলিয়ে ৪০টি কক্ষ আছে। গত বছর থেকে ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার পরও তেমন পর্যটক আসছেন না।তাঁর পক্ষে বেতন-ভাতাসহ দিয়ে কর্মচারীদের রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। হোটেল মাউন্টেইনের ব্যবস্থাপক তাহেরুল ইসলাম জানান, তাঁদের কোনো বুকিং নেই। ফলে কক্ষগুলো খালি অবস্থায় রয়েছে। তাহেরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের সাথে কথা বলেই ৩০-৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। তারপরও গত বছরের পাহাড়ধসের পর থেকে হোটেলে তেমন পর্যটক আসছেন না। কারণ খুঁজে পাচ্ছি না এই অনীহার।খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ম্যানেজার ইদ্রিস তালুকদার জানান, মোটেলে কোনো পর্যটক নেই দীর্ঘদিন।তবে হোটেলগুলোতে বুকিং না থাকলেও খাগড়াছড়ির রেস্তোরাঁগুলো ও পিক আপের বুকিং রয়েছে।

জিপ মালিক সমিতির লাইনম্যান মো. নাসির জানান, আগামী শুক্র ও শনিবার দুই দিন সাজেকে যাওয়া-আসার জন্য ২৬টি পিকআপ বুকিং দেওয়া হয়েছে। বুকিং আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।খাগড়াছড়ি শহরের এফএনএফ রেস্টুরেন্টের মালিক সাহেদুল হোসেন বলেন, কাল শনিবার ও রোববার তাঁদের রেস্টুরেন্টে ১০০ জনের বুকিং রয়েছে।খাগড়াছড়ি অন্যতম রেস্তোরাঁ সিস্টেমের কর্মচারী আচিং মারমা বলেন, তাঁদের রেস্টুরেন্টে শুক্রবার ও কাল শনিবার কয়েক শ জনের অর্ডার রয়েছে। রেস্তোরাঁয় পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধরনের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। অগ্রিম অর্ডার দিলে যেকোনো ধরনের খাবার রান্না করে দেওয়া হয়ে থাকে।খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কমার্সের সদস্য মো. কে এম ইসমাইল হোসেন বলেন, সাজেক ভ্যালি দেখার জন্য মূলত পর্যটকেরা আসেন। রাতের গাড়িতে খাগড়াছড়িতে এসে সকালেই সাজেকে চলে যান। আবার দুপুরে সাজেক থেকে চলে এসে রাতেই খাগড়াছড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণেই হোটেলে পর্যটক নেই।খাগড়াছড়িতে পর্যটক কম হলেও কমতি নেই নিরাপত্তায়। পর্যটকদের সুবিধার্থে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটন স্পটগুলোতে ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।