ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে সারাদেশে নৌ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বলেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ।রাজধানী ঢাকার আকাশ দুপুর থেকে হঠাৎ ছেয়ে গেছে কাল মেঘে। থেমে থেমে বইছে দমকা হাওয়া। কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া এবং কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার (২ মে) দুপুরে আবহাওয়া অধিদফতর ঝড়ো হাওয়ার এমনই সতর্কবাণী দিয়েছে।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান জানান, দুপুর ১টা থেকে পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বা আরও অধিক বেগে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিম বঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ বিরাজমান রয়েছে। রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া এবং বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থায় বলেছে, এ সময়ের শেষের দিকে বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।বিআইডব্লিউটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর নদীবন্দরের জন্য ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলায় এবং বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বুধবার দুপুর থেকে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।ক তিনি বলেন, “আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবার নৌযান চলাচল শুরু হবে।সাইফুল ইসলাম বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পারাপার বন্ধ আছে বেলা আড়াইটা থেকে। আর ৩টা থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটেও ফেরি বন্ধ রয়েছে।বিকাল ৩টা থেকে ঢাকার সদরঘাট, সাড়ে ৩টা থেকে নারায়ণগঞ্জ, ৪টা থেকে চাঁদপুর নৌবন্দর থেকেও চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়বলে জানান তিনি।বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, তারা ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে কোনো ধরনের নৌযান না ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।আমরা ঝড়ের সময়টা দেখব। ততক্ষণ নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এরপর ঝড়ের আপডেট নিয়ে আমরা দেখব চালানো যায় কিনা। যদি আবহাওয়া শান্ত হয় তারপর আবার নৌযান চলাচল শুরু করব।

ঢাকা সদরঘাট থেকে এমনিতে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি রুটে মোটামুটি ৬৫ থেকে ৭০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছাড়ে। সরকারি ছুটির দিনে ভিড় থাকে তুলনামূলকভাবে বেশি।আলমগীর কবির জানান, ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে চলতি গ্রীষ্ম মওসুমে সদরঘাট থেকে মোট ২০ বার নৌ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সারাদিন বন্ধ থাকার কোনো ঘটনা ঘটেনি।